কর আদায়ে জুলুম নয়,জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেছেন, এনবিআর কখনো জোর করে কর আদায় করবে না। বরং, কর আইন ও নিয়ম-কানুন পুরোপুরি মেনে কর সংগ্রহ করা হবে, যাতে কোনো ধরনের অন্যায় না হয়।
করদাতাদের স্বস্তি দেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আপনি যদি ধর্মে বিশ্বাস করেন, তাহলে বুঝবেন যে জুলুমের দায় একান্তই আপনার।” শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (ট্যাকসেশন) অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। সেমিনারে ‘অর্থ আইন, ২০২৪’ এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থায় আনা পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এছাড়া এনবিআরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশ নেন। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ও এনবিআরের প্রথম সচিব শেখ শামীম বুলবুল।
অন্যান্য বক্তার মধ্যে ছিলেন এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ, সদস্য (করনীতি) এ কে এম বদিউল আলম। সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশন প্রেসিডেন্ট ও কর কমিশনার (কর অঞ্চল-৬) মো. লুৎফুল আজীম। চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে কর কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “গত পাঁচ বছরে অর্থনীতিবিদরা বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করেছেন।
উপসংহারে এসেছে যে এনবিআর পর্যাপ্ত রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঘাটতি বাজেট করছি এবং ঋণ বাড়ছে, যা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের ওপর দেনার বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। করদাতারা নিশ্চিত হতে চান যে তারা যে কর দিচ্ছেন, তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং কোনো অপচয় হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের অনেক টাকা অপচয় ও অপব্যয় হয়, যা করদাতাদের বিরক্ত করে। উন্নত দেশের করদাতারা যে ধরনের সেবা পান, সে ধরনের সেবা আমাদেরও পাওয়ার দাবি রয়েছে।
আমাদের ব্যয়ের দিকেও সচেতন হতে হবে। আমরা যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, বিশেষ করে কর বিভাগে কর্মরত আছি, আমাদের জনগণের প্রতি অসীম ঋণ রয়েছে। আমরা তাদের টাকায় পড়াশোনা করেছি।
তাই তাদের যথাযথ সম্মান ও সেবা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।” এনবিআর চেয়ারম্যান আরও বলেন, “সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা মাত্র ১৫ লাখ, কিন্তু দেশে ৪-৫ কোটি লোক কর্মে নিয়োজিত আছেন, যারা প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমে কাজ পাচ্ছেন। তাই তাদের ফ্যাসিলিটেট করা জরুরি। আইনের সংস্কার প্রয়োজন, যা দুই ধাপে হবে—একটি হলো অতিরিক্ত ট্যাক্স ব্যয় রক্ষা করা এবং আরেকটি হলো করদাতাদের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ না দিয়ে করব্যবস্থা ঠিক করা।”