কিশোর-কিশোরীদের চুল পড়া,মানুষের শারীরিক কার্যক্রম অনুযায়ী চুল পড়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রতিদিন কিছু চুল ঝরে এবং নতুন চুল গজায়। তবে যখন চুল পড়ার হার নতুন চুল গজানোর তুলনায় বেশি হয়ে যায়, তখন এটি আশঙ্কাজনক হয়ে ওঠে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নারী-পুরুষ উভয়েরই চুল পড়ার প্রবণতা বাড়তে পারে, কিন্তু কম বয়সে, বিশেষ করে কৈশোরে অতিরিক্ত চুল পড়া স্বাভাবিক নয় এবং এটি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিত্বের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ভারতীয় চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রিংকি কাপুর বলেন, “বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো কিশোর বয়সেও চুল পড়ার সমস্যা দেখা যাচ্ছে। পরিবেশগত কারণ এবং হরমোনজনিত পরিবর্তনকে এর প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তবে এই সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত, না হলে কিশোরদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের সংকটসহ নানা মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।”
তিনি আরও কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেন যেগুলো কৈশোরে চুল পড়ার সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে:
১. বংশগত কারণ: চুলের রঙ ও দৈর্ঘ্যের মতো চুল পড়ার ক্ষেত্রেও জিনগত প্রভাব রয়েছে। পরিবারের কারও চুল পড়ার সমস্যা থাকলে কিশোরদের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
২. থাইরয়েড সমস্যা: থাইরয়েড হরমোন নিঃসরণের ভারসাম্যহীনতা চুল পড়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম থাইরয়েড নিঃসরণের ফলে হাইপারথাইরয়েডিজম বা হাইপোথাইরয়েডিজম হতে পারে, যা চুলের বৃদ্ধি ও নতুন চুল গজাতে বাধা দেয়।
৩. পুষ্টির অভাব: পুষ্টিহীনতা চুল পড়ার একটি বড় কারণ। খাবারে প্রোটিন, ভিটামিন, জিঙ্ক, আয়রন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর ঘাটতি থাকলে কৈশোরে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪. টেলোজেন এফ্লুভিয়াম: অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে কিশোর বয়সে টেলোজেন এফ্লুভিয়াম নামক রোগ হতে পারে, যার ফলে চুল পড়া বেড়ে যায়।
৫. চুলের স্টাইল: কৈশোরে স্টাইলের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। অনেকেই চুলে রাসায়নিক হেয়ার কালার, প্রসাধনী, স্ট্রেটনার বা ড্রায়ার ব্যবহার করে, কিংবা শক্ত করে চুল বাঁধে। এসবের কারণে চুল ও চুলের গোড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা চুল পড়ার কারণ হতে পারে।
এই কারণগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করলে কৈশোরে চুল পড়ার সমস্যার সমাধান সহজ হতে পারে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস