তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি,রাজধানীসহ দেশের মধ্যাঞ্চলে এ বছর বন্যার পানি প্রবেশ করেনি, তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বন্যার ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, তিস্তা নদীর পানি গত কয়েক দিন ধরে বাড়ছে এবং আজ শনিবার থেকে এর পানি দ্রুত বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও রংপুরের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও আত্রাই নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। যদিও এখনো এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে, তবে আজ তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, গতকাল তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বোচ্চ ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুর বিভাগের বেশিরভাগ জেলায়ও ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত দেখা গেছে।
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, আজ শনিবার থেকে তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। আগামী চার-পাঁচ দিন পর গঙ্গা অববাহিকায়ও পানি বাড়তে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া অঞ্চলের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, লালমনিরহাটের দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে গত বুধবার তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার এ পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়, এবং গতকাল শুক্রবার ৩২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, বর্ষার শেষ সময়ে সাধারণত বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পায়। আজ দেশের উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। তবে এরপরের দুই দিন বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী মাসের শুরুতে আবারও বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা তিন-চার দিন স্থায়ী হতে পারে। আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা
পাউবো ডালিয়া অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, ফলে তিস্তার পানি কিছুটা বেড়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল তেঁতুলিয়ায় সর্বাধিক ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। রংপুর বিভাগের বেশিরভাগ এলাকায় ১০০ থেকে ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকাসহ দেশের মধ্যাঞ্চলেও ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, গতকাল রাজধানীতে বেলা তিনটা পর্যন্ত ৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা জানান, বর্ষার শেষ সময়ে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পায়। আজ দেশের উত্তরাঞ্চলসহ কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তবে আগামী দুই দিন বৃষ্টি কমতে পারে। আগামী মাসের শুরুতে আবারও বৃষ্টিপাত হতে পারে, যা তিন-চার দিন স্থায়ী হতে পারে।
পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায়, পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা ও মহানন্দা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। শিবগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মো. আবতাবুজ্জামান-আল-ইমরান জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির ফলে ৮০০ পরিবার পানিবন্দী হয়েছে এবং ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
পাউবো চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব জানিয়েছেন, পদ্মার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার কমেছে এবং মহানন্দার পানি মাত্র এক সেন্টিমিটার বেড়েছে।