দৌলতপুরে গুলি করে হত্যা,কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নঈম উদ্দীন সেন্টু নিহত হয়েছেন। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে তার নিজ কার্যালয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ঘটনার চার ঘণ্টা পর বিকেল ৩টার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত নঈম উদ্দীন ফিলিপনগরের মৃত মতলেব সরকারের ছেলে এবং দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ছিলেন। ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে তিনি চশমা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর থেকেই তার আওয়ামী লীগ নেতা এবং সংসদ সদস্য সারওয়ার জাহান বাদশার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। এরপর তিনি বিএনপির রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে দূরে সরে যান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে, নঈম উদ্দীন প্রতিদিনের মতো তার কার্যালয়ে বসে কাজ করছিলেন। সকাল ১১টার দিকে কার্যালয়ের পেছনের জানালা দিয়ে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। প্রথমে দুটি গুলি করলে তিনি মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন, এরপর হামলাকারীরা সামনের ফটক দিয়ে কার্যালয়ে ঢুকে আরও দুটি গুলি করে তাকে হত্যা করে। গুলির শব্দে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা তাদের লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়ে এবং দ্রুত পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে নিহতের অনুসারীরা ইউনিয়ন পরিষদে ছুটে এলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত নঈম উদ্দীনের লাশ কার্যালয়ের মেঝেতে পড়েছিল। পরে র্যাব, বিজিবি ও সেনাসদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয়রা জানান, নঈম উদ্দীন বিএনপির রাজনীতি থেকে অনেকটাই দূরে সরে গিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লাও জানান, নঈম উদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে দলীয় রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন না।
গ্রাম পুলিশ নাসির উদ্দীন, যিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, জানান, তিনি গুলির শব্দ শুনে ভয়ে পাশের কক্ষে লুকিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণ পর বের হয়ে দেখেন চেয়ারম্যান মেঝেতে পড়ে আছেন। নিহতের জামাই হাসিবুর রহমান বিজয়ের মতে, ৫ আগস্টের পর থেকেই তার শ্বশুরকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল, যা হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারণ হতে পারে।
দৌলতপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশ আসামিদের ধরতে তৎপর রয়েছে এবং বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।