প্রধান শিক্ষককে বের করে দিয়ে,কুমিল্লার দেবিদ্বারে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করার পর প্রশাসনের সহায়তায় তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। পরে প্রধান শিক্ষকের চেয়ারে বসে পড়েন ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্র। ঘটনাটি ঘটেছে মোহনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের এ ধরনের আচরণ নিয়ে নেটিজেনদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চেয়ারে বসা ছাত্র ইকরামুল হাসান দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং সে স্থানীয় কুরুইন গ্রামের আবুল হাসমের পুত্র।
এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে।
ছবিতে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেনের নেম প্লেট সামনে রেখে সাদা পোশাকে ওই ছাত্র চেয়ারে বসে আছে। ছবিটি প্রথমে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে ইকরামুল লিখে, ‘আমাদের সু-সম্মানিত আলমগীর স্যার কোথায়?
গত বুধবার থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, তিনি আওয়ামী লীগ করেন এবং বিদ্যালয়ের অর্থে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তাই তারা তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে বলেন।
খবর পেয়ে দেবিদ্বার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে যান। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের অবস্থানে অনড় ছিল। শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রধান শিক্ষক বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।
ছাত্র ইকরামুল পরে বলেন, “সবাই অফিস কক্ষ ত্যাগ করার পর আবেগে চেয়ারে বসে ছবি তুলি, এটা আমার ঠিক হয়নি, সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। আমার ফেসবুক থেকেও তা বাদ দিয়েছি।”
প্রধান শিক্ষক কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। দেবিদ্বারে আমার দুটি বাড়ি আছে বলে তারা যে অভিযোগ করেছে, তা প্রমাণ করতে বলেছি, কিন্তু তারা প্রমাণ দিতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা হয়তো কারো ইন্ধনে ভুল বুঝে আন্দোলনে নেমেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, যদি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তবে আমরা বিধিমোতাবেক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। তবে ছাত্রটির চেয়ারে বসে ছবি তোলার যে আচরণ, তা মেনে নেওয়া যায় না। কোনো বিবেকবান ছাত্র এভাবে আচরণ করতে পারে না।