বেক্সিমকো ঋণসুবিধা, বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠী জানিয়েছে, তারা রপ্তানি কার্যক্রম চালাতে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, কারণ তাদের হাতে পর্যাপ্ত চলতি পুঁজি নেই। ফলে ব্যবসা হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ঋণসুবিধা পুনরায় চালু করার আবেদন করেছে বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল বিভাগ।
বেক্সিমকো শিল্পগোষ্ঠী অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে একটি চিঠি দিয়েছে। চিঠিটি পাঠানো হয়েছে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরকে। এই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন বেক্সিমকোর টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল বিভাগের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান কায়সার চৌধুরী।
চিঠিতে বলা হয়েছে, রপ্তানিমুখী উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে না পারলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসা হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বেক্সিমকোর রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় লুটপাট ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যার কারণে উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার মতো চলতি পুঁজি নেই তাদের। ফলে অনেক ক্রেতা বেক্সিমকো থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন, যা প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন সক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, আগস্ট মাসে শ্রমিকদের মজুরি দিতে ৬৯ কোটি টাকার প্রয়োজন ছিল, যার মধ্যে জনতা ব্যাংক থেকে ৫৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা কাঁচামাল আমদানির জন্য আলাদা তহবিল থেকে নেওয়া হয়েছে। তবে, নিয়মিত ঋণ সুবিধা বন্ধ থাকায় সেপ্টেম্বর মাসের মজুরি পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এই মাসের মজুরি পরিশোধের জন্য ৬৫ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বেক্সিমকো আরও জানিয়েছে, জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় থেকে এই অর্থ সরবরাহের অনুরোধ করা হয়েছে।
চিঠিতে বেক্সিমকো জনতা ব্যাংকের কাছে কয়েকটি বিশেষ সুবিধা চেয়েছে, যার মধ্যে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব বকেয়া সুদবিহীন ব্লক হিসেবে স্থানান্তর করা, দায় পরিশোধের জন্য ১০ বছরের সময়সীমা দেওয়া, এবং স্থানীয় সরবরাহে ১০ শতাংশ বিল ডিসকাউন্ট সুবিধার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এ ছাড়া, ৫ আগস্টের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যাংক হিসাবের তথ্যও তলব করা হয়েছে।