বর্তমান সরকার কি চাইলে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মন্তব্যের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা তার পদত্যাগ দাবি করলেও আইন ও সংবিধান অনুযায়ী তাকে সরিয়ে দেয়া সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একই সঙ্গে তারা মনে করছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর ‘আইন ও সংবিধানের’ গুরুত্ব কমে গেছে, ফলে ‘জনআকাঙ্ক্ষার’ ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে নতুন কাউকে নিয়োগ করা অসম্ভব নয়, যদিও বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী তা করা সম্ভব নয়।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির তীব্র সমালোচনা করলেও তার পদত্যাগ বা অপসারণের দাবিতে সরাসরি অবস্থান নিতে সতর্ক থেকেছে। বিএনপি দলের সিনিয়র নেতাদের এই ইস্যুতে মন্তব্য না করার পরামর্শ দিয়েছে, আর জামায়াতে ইসলামী বলেছে, “রাষ্ট্রপতি মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে তার পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন।”
বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতিকে সংসদ অভিশংসন করতে পারে, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সংসদ বাতিল হওয়ায় সেই সুযোগ নেই। আবার, রাষ্ট্রপতি চাইলে পদত্যাগ করতে পারেন, কিন্তু স্পিকার পদত্যাগ করেছেন এবং ডেপুটি স্পিকার কারাগারে থাকায় সেটিও সম্ভব হচ্ছে না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন বলেছেন, বর্তমান সংকট তৈরি হয়েছে কারণ গণঅভ্যুত্থানের পরও সংবিধান স্থগিত করা হয়নি, আবার তা পুরোপুরি অনুসরণও করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, “এটি একটি লিগ্যাল অ্যানার্কি তৈরি করেছে, যেখানে অনেক কিছুই নিয়ম মেনে হচ্ছে না।”

সিনিয়র আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুমের মতে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনগত কাঠামো অনুযায়ী চলার চেষ্টা করছে, তবে তারা সংবিধানের কিছু ধারা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করছে। “রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে রেফারেন্স নিতে হবে,” তিনি যোগ করেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অপসারণের বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে অনাগ্রহী হলেও, দলীয়ভাবে তারা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে।
সুত্র: বিবিসি