১৮১ জনকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ান মুয়ান বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বিমান। মাটি ছোঁয়ার ঠিক আগে রানওয়ের উপরেই বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারান পাইলট। মুহূর্তে তাতে আগুন ধরে যায়।
বিমান দুর্ঘটনা দক্ষিণ কোরিয়ায়,আবার বিমান দুর্ঘটনা। কাজ়াখস্তানের পর এ বার দক্ষিণ কোরিয়া। ১৮১ জনকে নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ান মুয়ান বিমানবন্দরে ধাক্কা খেয়েছে বিমান। ১৭৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মাটি ছোঁয়ার ঠিক আগে রানওয়ের উপরেই বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারান পাইলট। দেওয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষে মুহূর্তেই তাতে আগুন ধরে যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার সংবাদমাধ্যমকে উল্লেখ করে এই খবর জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। মোট দু’জনকে গুরুতর জখম অবস্থায় বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁরা দু’জনেই বিমানকর্মী। ওই বিমানে তাইল্যান্ডের দু’জন নাগরিকও ছিলেন। একে দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে ‘অন্যতম ভয়ঙ্কর বিমান দুর্ঘটনা’ বলা হচ্ছে।
সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু এয়ার সংস্থার বিমানটি ব্যাঙ্কক থেকে মুয়ান শহরে আসছিল রবিবার। মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানের আগুন নেভানো হয়েছে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ছবি এবং ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মুয়ান বিমানবন্দরের আকাশ ঢেকেছে কালো ধোঁয়ায়। তবে সেই ভিডিয়ো বা ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। দুর্ঘটনার পর জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন দেশের প্রেসিডেন্ট।
কী ভাবে দুর্ঘটনা? দক্ষিণ কোরিয়ার জরুরি বিভাগ তার কারণ খতিয়ে দেখছে। তবে মনে করা হচ্ছে, বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই কারণে রানওয়ের উপরে বিমানটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি পাইলট। বিমানে ১৭৫ জন যাত্রী এবং ছ’জন বিমানকর্মী ছিলেন।
এই মুহূর্তে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল। চলতি মাসের গোড়ায় দেশে সামরিক (মার্শাল) আইন কার্যকরের সুপারিশ করে বিতর্কে জড়ান সদ্য প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইউল। পার্লামেন্টের এমপিরা তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরানোর প্রক্রিয়া (ইমপিচমেন্ট) শুরু করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল হান ডাক-সু-কে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এক মাসেরও কম সময়ে পর পর তিন বার প্রেসিডেন্ট বদল হয়েছে। শুক্রবারই সে দেশের অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন চোই সাং-মোক। প্রশাসনিক কর্তাদের উদ্ধারকাজকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত ২৫ ডিসেম্বর আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্সের একটি বিমান রাশিয়ার দিকে যাওয়ার পথে ভেঙে পড়ে কাজ়াখস্তানের উপর। জরুরি অবতরণের চেষ্টা করেছিলেন পাইলট। কিন্তু বিমান তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকেনি। ওই বিমানে ৬৭ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ২৯ জনকে।