দেশের সরকারি ডেটা বিদেশে সংরক্ষণ: সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলো গুরুত্বপূর্ণ নথি
দেশের রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ডেটা ও নথি দেশের বাইরে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর ঘটনা সামনে এসেছে। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত জাতীয় টায়ার ফোর ডেটা সেন্টারে কী ঘটেছে যে, এমন গোপনীয়তা রক্ষার সাথে রাষ্ট্রীয় ডেটা বিদেশী কোম্পানি ওরাকলকে ডেকে এনে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হলো?
২০২১ সালে, কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা ছাড়াই জাতীয় ডেটা সেন্টারের ক্লাউড সেবার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি ওরাকলকে দেওয়া হয়। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এই চুক্তি করা হয় যার জন্য প্রতিষ্ঠানকে ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার পরিশোধের কথা ছিল। সেই সময়ে চুক্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ২০৭ কোটি টাকা।
চুক্তি স্বাক্ষরের আড়াই বছর পর ওরাকল ক্লাউড সেবা চালু করে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। চুক্তি অনুযায়ী, বিডিসিসিএলকে ক্লাউড সেবা প্রদান করে ওরাকল, কিন্তু এই সেবা সিঙ্গাপুরে সংরক্ষিত হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে, ২০২০ সালে সরকারের জন্য কেন্দ্রীয় ক্লাউড সেবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বাংলাদেশের কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীন জাতীয় ডেটা সেন্টারকে (এনডিসি) ওরাকল ক্লাউড সেবার প্রস্তাব দেয়। তবে, তৎকালীন পরিচালক তারিক এম বরকতউল্লাহ এই প্রস্তাবটি বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) দিকে ঘুরিয়ে দেন।
তথ্য মতে, সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলক এই ক্লাউড সেবার ব্যাপারে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চুক্তির শর্তাবলী অনুসারে তিন বছর মেয়াদি ক্লাউড সেবা নেওয়ার জন্য মোট ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
ওরাকলের ক্লাউড পরিষেবা বাংলাদেশে স্থাপন করতে গিয়ে নানা জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়, যার ফলে সিঙ্গাপুরে ডেটা সংরক্ষণ করা হয়। প্রাথমিকভাবে ওরাকলের ক্লাউড সেবা চালু করা বিলম্বিত হয় এবং অবশেষে মে মাসে এর উদ্বোধন হয়।
জানা গেছে, এই ক্লাউড সেবার জন্য কোনো আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান না করেই সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে কাজটি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কাস্টমসকে ফাঁকি দিয়ে বিনাশুল্কে যন্ত্রাংশ আমদানি করার চেষ্টা করা হয়, যা পরে ধরা পড়ে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং কোনো অপরাধী শাস্তির আওতায় আসবে।