- ইরানের পরমাণু ও তেল কেন্দ্রে হামলা চালাতে পারে ইসরাইল
- ইসরাইলের সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার যুক্তরাষ্ট্রের
- লেবাননে হিজবুল্লাহ-আইডিএফ তীব্র লড়াই
- জাতিসংঘ মহাসচিবকে নিষিদ্ধ ঘোষণা তেল আবিবের
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইল-ইরান সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংঘাতের প্রভাবে পার্শ্ববর্তী দেশগুলিতেও যুদ্ধের সম্ভাবনা বাড়তে পারে। ইসরাইলে ইরানের উপর্যুপরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তেল আবিবের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ওয়াশিংটন অঙ্গীকার করেছে, আর তেহরানও পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েছে। এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে পুরো মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের ঝুঁকিতে পড়তে পারে, যা বিশ্বব্যাপী আর্থসামাজিক প্রভাব ফেলবে।
যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য
হিজবুল্লাহ ইসরাইল যুদ্ধ,মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের আগুন জ্বলছে। ইরান-ইসরাইল সংঘাত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। লেবাননে ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যুর বদলা নিতে ইরান ভয়ংকর হামলা চালিয়েছে ইসরাইলে। প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল গোটা ইসরাইলজুড়ে আছড়ে পড়েছে, যার মধ্যে মোসাদের সদর দপ্তরও ছিল। তবে সেটি অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এর ফল ইরানকে ভোগ করতে হবে। তিনি বলেন, ইসরাইল পালটা হামলা চালাতে প্রস্তুত।
সাবেক ইসরাইলি গোয়েন্দা কর্মকর্তা আভি মেলামেদ জানিয়েছেন, “ইরানের হামলা হলো ইসরাইলকে বড় ধরনের পালটা হামলার জন্য উস্কানি দেওয়া। আমরা শিগগিরই ইরানি লক্ষ্যবস্তুতে ইসরাইলি প্রতিশোধ দেখতে পাব।”
বিবিসি জানিয়েছে, ইসরাইলের কৌশল এখন দুইভাবে এগোনো: হত্যা, বিমান হামলা এবং প্রতিরোধ। এই কৌশলটি ইরান ও তার ছায়াশক্তিগুলোকে বুঝিয়ে দেয় যে, ইসরাইলকে আঘাত করলে আরও বড় শক্তির মুখোমুখি হতে হবে। কিন্তু ইসরাইলের প্রতিশোধ কেমন হতে পারে? ইসরাইলের হাতে দীর্ঘদিনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে ইরানে হামলার জন্য। তাদের প্রতিরক্ষা প্রধান এখন পর্যালোচনা করছেন কখন ও কীভাবে ইসলামি প্রজাতন্ত্রে আঘাত করবেন। এই আক্রমণে সম্ভাব্য লক্ষ্য হবে সেই স্থলভাগ, যেখান থেকে মঙ্গলবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে।
ইরানের গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, ইসরাইল যে কোনো সময় তাদের পরমাণু ও তেল কেন্দ্রগুলোতে হামলা চালাতে পারে। তবে ইসরাইলের যেকোনো পদক্ষেপের পর ইরানের পালটা হামলা অবশ্যম্ভাবী। ইরানের সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি সতর্ক করেছেন, যদি ইসরাইল প্রতিশোধের চেষ্টা করে, তবে তারা ইসরাইলের সব স্থাপনায় হামলা চালাবে। ফলে উভয় দেশ হামলা ও প্রতিশোধের চিরস্থায়ী এক চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়বে। সাবেক মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেছেন, ইরান বড় ধরনের যুদ্ধ চায় না।
পরিণতির হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
ইসরাইলে সরাসরি সামরিক হামলার জন্য ইরানকে ‘কঠোর পরিণতির’ হুমকি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণে জোর দিয়েছে। হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানিয়েছেন, এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল একসঙ্গে কাজ করেছে। বর্তমানে অঞ্চলটি উত্তেজনা-পাল্টা উত্তেজনার একটি চক্রে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত কয়েক মাস ধরে এই পরিস্থিতি এড়ানোর চেষ্টা করছেন, যাতে গাজা যুদ্ধ ছড়িয়ে না পড়ে।
ইরানের হামলার নিন্দা না করায় জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করেছে ইসরাইল, অর্থাৎ তিনি যে কূটনৈতিক সুবিধা পান, তা দেওয়া হবে না।
হিজবুল্লাহর দাবি
দক্ষিণ লেবাননের ওদাইসেহ শহরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা ইসরাইলি পদাতিক বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের খবর দিয়েছে হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি দাবি করেছে, সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ইসরাইলি সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। এই ঘটনা ইসরাইলের স্থল অভিযানের পর প্রথম সরাসরি সংঘর্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। হিজবুল্লাহর হামলায় একজন ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে, যা এই অভিযানের পর প্রথম সেনা মৃত্যুর ঘটনা।
সুত্র:ইত্তেফাক