১৮৭ পুলিশ সদস্য অনুপস্থিত,গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৮৭ জন সদস্য এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। তবে এ সংখ্যা ছাড়াও অনেক পুলিশ সদস্য বিভিন্ন কৌশলে বা কারণ দেখিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখানো ও নানা বিতর্কে জড়ানো পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা এখন আর প্রকাশ্যে আসছেন না। অনেকেই কর্মস্থলে যোগ দিয়েও বিভিন্ন অজুহাতে ছুটি নিয়েছেন বা বিনা ছুটিতেই অনুপস্থিত রয়েছেন। ৫ আগস্টের পর কর্মস্থলে যোগ না দেওয়া ১৮৭ জনের তালিকায় এই শীর্ষ কর্মকর্তাদের নাম নেই। পুলিশের একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের গুঞ্জনও রয়েছে, কেউ কেউ শিক্ষা ছুটি, অসুস্থতা, বা লিয়েন নিয়ে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ আবার অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমেরও চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে আত্মগোপনে থাকা কর্মকর্তাদের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য দেওয়া হয়নি।
১৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক অনুষ্ঠানে বলেন, যেসব পুলিশ সদস্য এখনো কাজে যোগ দেননি, তাঁদের আর যোগ দিতে দেওয়া হবে না এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৫ আগস্টের পর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের অন্তত ২৩ জন কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মনিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ আলী মিয়া, মো. আসাদুজ্জামান প্রমুখ। অবসরে পাঠানোর আগে তাঁদের বেশিরভাগই আত্মগোপনে ছিলেন। জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে এবং ইতিমধ্যে সাবেক দুই আইজিপিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৭ জন পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।
১২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে ৮ জন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা। পুলিশের ৯৯ জন সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা ও অপহরণের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
১৮৭ জনের তালিকায় ডিআইজি থেকে সহকারী পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ১৬ জন কর্মকর্তা, ৫ জন পুলিশ পরিদর্শক, ১৪ জন উপপরিদর্শক, এবং অন্যান্য পদমর্যাদার এএসআই, নায়েক ও কনস্টেবলরা আছেন। শীর্ষ পর্যায়ের অনুপস্থিত কর্মকর্তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ডিএমপির সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মনিরুজ্জামান, এবং রংপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার উত্তম কুমার পাল।
অনুপস্থিত বা আত্মগোপনে থাকা এসব পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে পুলিশের মুখপাত্র ইনামুল হক জানান, কর্মস্থলে যোগ না দেওয়া ১৮৭ জন সদস্যের আর কাজ যোগ দেওয়ার সুযোগ নেই।