ইরানে কড়া পোশাকবিধির, ইরানে মেয়েদের জন্য কড়া পোশাকবিধির কথা অজানা নয়। এই কড়াকড়ির প্রতিবাদে সেই পোশাকই খুলে ফেললেন তরুণী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে তিনি হাঁটলেন শুধু অন্তর্বাস পরে।
এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ইরানের ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শুধু অন্তর্বাস পরে হাঁটছেন তরুণী। পরনের পোশাক খুলে ফেলেছেন তিনি। কিছু ক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা যায় ওই তরুণীকে আটক করতে। (এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা যায়নি)।
তরুণীর মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেখানকার মুখপাত্র আমির মাহজব বলেন, ‘‘ওই তরুণী নির্দিষ্ট কিছু মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর মাথার ঠিক নেই। থানা থেকে তা নিশ্চিত করা হয়েছে।’’
তবে শুধু মানসিক সমস্যা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকলের সামনে পোশাক খুলে ফেলেছেন, মানতে নারাজ অনেকেই। তাঁদের দাবি, ইরানের রাস্তায় মেয়েদের জন্য হিজাব বাধ্যতামূলক। অনেকেই এই বাধ্যবাধকতায় অতিষ্ঠ। তাই ওই তরুণীও পোশাক খুলে কড়া পোশাকবিধির বিরুদ্ধে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
নিরাপত্তারক্ষীরা তরুণীকে আটক করে নিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তার পর তাঁর কী পরিণতি হয়েছে, স্পষ্ট নয়। ইরানি সংবাদমাধ্যমগুলির তথ্য অনুযায়ী, ওই তরুণীকে কোনও মানসিক রোগীদের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ১৯ বছরের মাহশা আমিনির মৃত্যু ইরানে আগুন জ্বালিয়েছিল। পোশাকবিধি না মানায় তাঁকে আটক করেছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তার পর হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। মাহশার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি হিজাব দিয়ে মাথার চুল পুরোপুরি ঢাকেননি। তাই তাঁকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে আটক করে পুলিশ। অভিযোগ, হেফাজতে থাকাকালীন অত্যাচার করে মাহশাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর প্রতিবাদ বিক্ষোভে সরব হয় গোটা দেশ। প্রকাশ্যে হিজাব পুড়িয়ে, মাথার চুল কেটে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন ইরানের মেয়েরা। কঠোর ভাবে সেই বিক্ষোভ দমন করেছিল ইরান সরকার।
ইরানের শরিয়া আইন অনুযায়ী, নারীরা তাঁদের চুল ঢেকে রাখতে এবং লম্বা-ঢিলেঢালা পোশাক পরতে বাধ্য। যাঁরা এ আইন মানেন না, তাঁরা জনসাধারণের তিরস্কারের যোগ্য। পুলিশ তাদের জরিমানা বা গ্রেফতারও করতে পারে। মনে করা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পোশাক খুলে ফেলে এই আইনের বিরুদ্ধেই নতুন করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তরুণী।
সুত্র: আনন্দবাজার