০১/২০
পানামা খাল ফেরত চাওয়ার পর এ বার গ্রিনল্যান্ড কিনে নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে সেই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন আমেরিকার হবু প্রেসিডেন্ট। যদিও গ্রিনল্যান্ড তা পত্রপাঠ খারিজ করেছে।
০২/২০
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ। গ্রিনল্যান্ডীয় ভাষায় একে ‘কালাল্লিত নুনাত’ বলা হয়, যার অর্থ ‘গ্রিনল্যান্ডে থাকা মানুষদের ভূমি’।
০৩/২০
গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা মহাদেশের স্বশাসিত দ্বীপ। তবে এটি বিবেচিত হয় ইউরোপের দেশ ডেনমার্কের অংশ হিসাবে।
০৪/২০
কিন্তু কেন এই দ্বীপের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে আমেরিকা? ট্রাম্পের দাবি, গ্রিনল্যান্ডের উপর নিয়ন্ত্রণ ‘অত্যাবশ্যক’।
০৫/২০
নিজের সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘সারা বিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে আমেরিকা মনে করে যে, গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা এবং নিয়ন্ত্রণ এই মুহূর্তে অত্যাবশ্যক।’’
০৬/২০
ডিজিটাল লেনদেন সংস্থা পেপ্যালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা কেন হাওয়ারিকে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হিসাবে ঘোষণা করার সময় এই বিবৃতি দেন ৭৮ বছর বয়সি রিপাবলিকান নেতা। যদিও ট্রাম্পের বিবৃতির পর গ্রিনল্যান্ড স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা বিক্রি হতে রাজি নয়।
০৭/২০
তবে গ্রিনল্যান্ডের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রথম ট্রাম্প জমানায় ওই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। গ্রিনল্যান্ড চুক্তি করতেও উঠেপড়ে লেগেছিলেন।
০৮/২০
২০১৯ সালে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, গ্রিনল্যান্ডের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভূ-রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতার কারণে তিনি ওই অঞ্চল কিনতে চান। তাঁর সেই ইচ্ছা শুনে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন গ্রিনল্যান্ড এবং ডেনমার্কের নেতারা। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বলেছিলেন, ‘‘গ্রিনল্যান্ডকে কোনও ভাবেই বিক্রি করা হবে না।’’
০৯/২০
২০১৯ সালে গ্রিনল্যান্ড সফরে গিয়ে ফ্রেডেরিকসেন বলেছিলেন, ‘‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্ক নয়। গ্রিনল্যান্ড গ্রিনল্যান্ডের অন্তর্গত। আমি দৃঢ় ভাবে আশা করি যে বিষয়টি সবাই বুঝবেন।’’
১০/২০
গ্রিনল্যান্ড চুক্তির বিষয়ে ফ্রেডেরিকসেনের সেই মন্তব্যের পর তাঁর সঙ্গে ডেনমার্কে হতে চলা একটি বৈঠক বাতিল করেন ট্রাম্প।
১১/২০
গ্রিনল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে আমেরিকার মহাকাশ বাহিনীর ঘাঁটি পিটুফিক স্পেসবেস (আগে থুলে এয়ারবেস নামে পরিচিত ছিল) রয়েছে। আর তার জন্যও গ্রিনল্যান্ডের দখল আমেরিকা নিজেদের হাতে রাখতে চায় বলে মনে করা হয়।
১২/২০
সুমেরুর কাছে অবস্থিত দ্বীপটির কৌশলগত অবস্থানের কারণে রাশিয়া-সহ অনেক দেশই সেটির নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা করছে অনেক দিন ধরে।
১৩/২০
গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকা মহাদেশের একটি অংশ হলেও ভূ-রাজনৈতিক ভাবে সেটি ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দারা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিক হিসাবে গণ্য হন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে টাকাও আসে গ্রিনল্যান্ডে।
১৪/২০
গ্রিনল্যান্ডের দখল নিয়ে ট্রাম্পের নতুন মন্তব্যের পর গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেডে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনিও বলেছেন, ‘‘আমরা বিক্রি হচ্ছি না এবং আমরা বিক্রি হবও না।’
১৫/২০
এগেডের কথায়, ‘‘স্বাধীনতার জন্য আমাদের দীর্ঘ সংগ্রামকে ভুললে হবে না। তবে, অবশ্যই আমাদের সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে, বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সহযোগিতা এবং বাণিজ্যের জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে।’’
১৬/২০
গ্রিনল্যান্ড কিনে নিয়ন্ত্রণ করার ইচ্ছাপ্রকাশের আগে পানামাকেও হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের দাবি ছিল, পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ আমেরিকার হাতে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত পানামার। খাল দিয়ে আমেরিকার জাহাজ যাওয়ার জন্য যে পরিমাণ অর্থ নেওয়া হয়, তা ‘বিরক্তিকর’ বলেও তিনি মন্তব্য করেছিলেন।
১৭/২০
ট্রাম্পের সেই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো। মুলিনোর দাবি, পানামা দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ যাওয়ার জন্য যে টাকা নেওয়া হয়, তা নির্দিষ্ট। ইচ্ছামতো সেগুলো নির্ধারিত হয়নি।
১৮/২০
১৯১৪ সালে পানামা খালের নির্মাণকাজ শেষ করে আমেরিকা। ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তা আমেরিকার নিয়ন্ত্রণেই ছিল।
১৯/২০
তবে ১৯৯৭ সালের স্বাক্ষরিত চুক্তির ভিত্তিতে পানামার কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে খালের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, পানামা খাল দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমেরিকার জাহাজই যাতায়াত করে।
২০/২০
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে কানাডাকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার কথা শোনা গিয়েছে ট্রাম্পের গলায়। ট্রাম্পের সেই মন্তব্যকে অবশ্য ‘মশকরা’ বলেছিল কানাডা। তবে যে যা-ই বলুক, সরকারি ভাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই ‘আগ্রাসী’ ট্রাম্পকে নিয়ে বেড়ে চলেছে আতঙ্ক।
সব ছবি: সংগৃহীত।