টানা পাঁচ হারে মুশফিক, বিপিএলে চোখ রেখে শুরু হয়েছিল জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টি। তবে আসরটি যে এতটা জমে উঠবে, তা কে জানত!
লিগ পর্বের বাকি আর এক রাউন্ড। অথচ প্লে-অফ পর্বে ওঠার লড়াইয়ে এখনো টিকে আছে পাঁচ দল—চট্টগ্রাম, খুলনা, সিলেট, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগ।
টানা পাঁচ জয়ে আগেই প্লে-অফ পর্ব নিশ্চিত করা ঢাকা মহানগর ও রংপুর বিভাগের আজকের লড়াইটা ছিল শীর্ষে ওঠার; একই সঙ্গে অজেয় যাত্রা ধরে রাখার। সেই লড়াইয়ে আকবর আলীর রংপুরকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার চূড়ায় উঠে গেছে সাদমান ইসলাম-মোহাম্মদ নাইমদের ঢাকা মহানগর।
অন্য ম্যাচে খুলনা বিভাগের কাছে চট্টগ্রাম বিভাগ ৫ উইকেটে হেরে যাওয়ায় প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলা নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা মহানগর ও রংপুরের।
দিনের বাকি ম্যাচ দুটিতেও পরে ব্যাট করা দল জিতেছে। ঢাকা বিভাগের কাছে ২ উইকেটে হেরে সবার আগে লিগ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে রাজশাহী বিভাগ। আরেক ম্যাচে স্বাগতিক সিলেট বিভাগ বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে পেয়েছে ২ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয়।
অথচ অপেক্ষাকৃত দুর্বল স্কোয়াড নিয়েও জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল রাজশাহী। এরপরই ছন্দপতন। পরবর্তীতে জাতীয় দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন, উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও মিডল অর্ডারের বড় ভরসা তাওহিদ হৃদয় আসায় অনেকে হয়তো ভেবেছিলেন, ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ চারে জায়গা করে নেবে রাজশাহী। কিন্তু জাতীয় দলের তারকাদের নিয়েও লিগ পর্বের বাধা টপকাতে পারল না উত্তরবঙ্গের দলটি। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচেই হার।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগামীকালের ম্যাচটি রাজশাহীর জন্য নিছক আনুষ্ঠানিকতার হলেও স্বাগতিক সিলেটের জন্য বাঁচামরার। পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে আসা সিলেটের রাজশাহীর বিপক্ষে বিশাল ব্যবধানে জিততে তো হবেই; একই সঙ্গে কামনা করতে হবে খুলনা ও চট্টগ্রামের হার।
বরিশাল ও ঢাকার ম্যাচে ঢাকা ছোট ব্যবধানে জিতলেও লাভ হবে সিলেটের। তবে চট্টগ্রাম ও খুলনা যার যার ম্যাচ জিতলে কোনো হিসাব-নিকাশ ছাড়াই প্লে-অফ পর্বে ঢাকা মহানগর ও রংপুরের সঙ্গী হবে তারা।
মুশফিক-নাজমুলদের রাজশাহীকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিতে বড় অবদান রেখেছেন জাওয়াদ আবরার। সিলেট আউটার স্টেডিয়ামে রাজশাহীর দেওয়া ১৪১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ঢাকা বিভাগকে ঝোড়ো শুরু এনে দেন আরবার।
কদিন আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে ফেরা এই ওপেনার স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে আজ নিজের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেই পেয়েছেন প্রথম ফিফটি। ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৯ বলে ৬২ রানের ইনিংসটা তাঁকে ম্যাচসেরার পুরস্কারও এনে দিয়েছে।
রংপুরের বিপক্ষে জিতে ঢাকা মহানগরের শীর্ষে ওঠার পথ সহজ করেন দেন আলিস আল ইসলাম ও আবু হায়দার। দুজনই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। আলিসের ঘূর্ণিতে পাওয়ারপ্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৫ রান তুলতে পারে রংপুর। আলাউদ্দিন ২৩ বলে ৪৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেললে ১২৫ রানে থামে দেশের সর্ব উত্তরের বিভাগীয় দলটি।
রান তাড়ায় পাওয়ারপ্লেতে মোহাম্মদ নাঈম ও ইমরানউজ্জামানের উইকেট হারালেও বাংলাদেশ টেস্ট দলের ওপেনার সাদমানের ফিফটিতে ৭ উইকেট ও ২৭ বল বাকি রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ঢাকা মহানগর।