গবেষণা কী বলছে
প্রতিদিন হাঁটার পরামর্শ, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) প্রতিদিন অন্তত ৮ কিলোমিটার হাঁটার সুপারিশ করে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, সপ্তাহে অন্তত দেড় ঘণ্টা মাঝারি মাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম করা উচিত। অ্যারোবিক ব্যায়াম এমন ধরনের শারীরিক ক্রিয়া, যা হৃৎস্পন্দন বাড়ায় এবং শরীর ঘামাতে সাহায্য করে, যেমন দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো, দৌড়ানো, জগিং, দড়িলাফ, সাঁতার কাটা বা অ্যারোবিক ড্যান্স। WHO-এর মতে, সপ্তাহে পাঁচ দিন আধা ঘণ্টা করে দ্রুত হাঁটা এই নিয়মের আওতায় পড়ে। সেই হিসেবে, পূর্ণবয়স্কদের প্রতিদিন ৪-৫ কিলোমিটার হাঁটার লক্ষ্য স্থির করা উচিত। তবে, এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা ওজন কমাতে এবং ফিটনেস বজায় রাখতে চান, তাদের জন্য প্রতিদিন ৬-৮ কিলোমিটার হাঁটা সবচেয়ে উপকারী।
হাঁটাহাঁটি একটি সহজ ও কার্যকর শারীরিক ব্যায়াম, যা প্রতিদিন করা সম্ভব। এর জন্য কোনো বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় না, এবং যেকোনো সময়ই হাঁটতে বের হওয়া যায়। অল্প সময় হলেও নিয়মিত হাঁটা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে প্রশ্ন হলো, প্রতিদিন ঠিক কতটুকু হাঁটলে শরীরের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে? বয়স অনুযায়ী প্রতিদিন কতটুকু হাঁটা আদর্শ, তা জেনে রাখা জরুরি।
শিশু ও প্রবীণদের হাঁটা
শিশুদের জন্য ধীরে ধীরে হাঁটার অভ্যাস শুরু করা ভালো, আর কিশোরদের প্রতিদিন দেড় ঘণ্টা হাঁটার লক্ষ্য রাখা উচিত। প্রবীণরা ধীরেসুস্থে হাঁটতে পারেন এবং প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটলে ২-৪ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করা সম্ভব। এটি তাদের জন্য একটি আদর্শ লক্ষ্য হতে পারে। ৬-১৭ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের প্রতিদিন অন্তত ৬০ মিনিট মাঝারি থেকে উচ্চমাত্রার শারীরিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন, যার মধ্যে হাঁটাহাঁটিও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। এ বয়সে শিশু-কিশোররা প্রতিদিন ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটলে ৩-৪ কিলোমিটার হাঁটা সম্ভব।
হাঁটার উপকারিতা
হাঁটাহাঁটি হলো সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর ব্যায়াম, যার উপকারিতা অনেক। এটি মানসিক চাপ কমায়, রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্য উন্নত করে, মন ভালো রাখে এবং শরীরের শক্তি বাড়ায়। নিয়মিত হাঁটলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে, মাংসপেশি মজবুত হয় এবং সন্ধিগুলো নমনীয় থাকে।
কীভাবে সর্বোচ্চ উপকার পাবেন
প্রথমে ঠিক করুন, সপ্তাহে ঠিক কতক্ষণ হাঁটবেন। সপ্তাহে দেড় ঘণ্টা হাঁটা উপকারী। নিজের রুটিন অনুযায়ী হাঁটার সময় নির্ধারণ করতে পারেন এবং সুন্দর পরিবেশে হাঁটা হাঁটাহাঁটিকে আরও উপভোগ্য করে তোলে। নিয়মিত পথ বদল করাও ভালো। হাঁটার জন্য আরামদায়ক ও ভালো মানের জুতা ব্যবহার করা উচিত, যাতে আঘাতের ঝুঁকি কম থাকে। হাঁটার সময় পেট ভেতরের দিকে টেনে রাখতে হবে এবং হাত মুক্ত রাখতে হবে। সঠিক ভঙ্গিতে হাঁটলে পেশির টান ও আঘাতের ঝুঁকি কমে যায়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া