পেঁয়াজপাতার ৯টি, পেঁয়াজপাতা পেঁয়াজের কলি হিসেবে সমধিক পরিচিত। শীতের সবজির মধ্যে পেঁয়াজপাতা বেশ জনপ্রিয়। খেতেও এটি অত্যন্ত সুস্বাদু। একে স্প্রিং অনিয়ন বা সবুজ পেঁয়াজও বলা হয়। পেঁয়াজপাতায় ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ক্যালসিয়াম এবং পটাশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে মজবুত করা, হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখা এবং হৃদ্রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। পেঁয়াজপাতার আরও কিছু গুণ রয়েছে। চলুন জেনে নিই—
রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা শক্তিশালী করে
পেঁয়াজপাতা ভিটামিন সি ও কুয়ারসেটিন নামের ফ্ল্যাভোনয়েডের ভালো উৎস। এই দুটি উপাদান রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং অসুস্থতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সহায়তা করে
পেঁয়াজপাতায় প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক আঁশ রয়েছে, যা খেলে পেট ভরা থাকে। পাশাপাশি ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণেও থাকে। এ কারণে অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষা কমে যায়, যা ওজন কমাতে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক আঁশ বা ফাইবার ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও কমাতে পারে।
ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর
পেঁয়াজপাতায় বায়োফ্ল্যাভোনয়েডস নামে একটি উদ্ভিজ্জ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি অগ্ন্যাশয় ও অন্ত্রের ক্যানসার হ্রাস করতে পারে। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁয়াজকলিতে অ্যালিসিন নামে যে যৌগ থাকে, তা ক্যানসারের কোষ গঠনে বাধা দেয়, ধীর করে টিউমারের বিস্তার।
সংক্রমণ প্রতিরোধ করে
পেঁয়াজ ও রসুনের নির্যাস দীর্ঘদিন ধরেই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এগুলো ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও ভাইরাস মারতে পারে। যার ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধ হয়। পেঁয়াজের নির্দিষ্ট প্রজাতির ওপর ল্যাব টেস্টে দেখা গেছে, পর্যাপ্ত ঘনত্বে এটি সালমোনেলা বা ই. কোলাই বৃদ্ধি ধীর করতে বা মেরে ফেলতে পারে।
হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষা দেয়
পেঁয়াজপাতায় স্বাভাবিকভাবেই প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এটি হৃৎপেশি উন্নত করতে সাহায্য করে, খারাপ এলডিএল কমায় এবং ভালো এইচডিএলের মাত্রা বাড়ায়। এ ছাড়া পেঁয়াজপাতা হৃদ্রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।
রোগের ঝুঁকি কমায়
পেঁয়াজপাতা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টে ভরপুর, যার মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এগুলো কোষের ক্ষতি প্রতিরোধে সাহায্য করে। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পলিফেনল ফ্রি র্যাডিকেলসকে ধ্বংস করে। এই ফ্রি র্যাডিকেলসের কারণে ক্যানসার, হৃদ্রোগ এবং বার্ধক্যজনিত রোগ হতে পারে।
হাড়কে শক্তিশালী করে
পেঁয়াজকলি কোলাজেন সংশ্লেষণকে উদ্দীপিত করে, যা হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করে। এতে থাকা ভিটামিন কে হাড়ের ঘনত্ব বজায় রাখতে সহায়তা করে।
শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
পেঁয়াজপাতায় থাকা সালফার যৌগ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলো ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সহায়তা করে, যা শরীরে গ্লুকোজের শোষণ প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এটি কার্যকর।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় পেঁয়াজপাতা হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করতে সাহায্য করে। ফাইবার অন্ত্রে খাবার সহজে চলাচলে সহায়তা করে, যা কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য হজমজনিত সমস্যার সমাধান করতে পারে। এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যার উপশমেও সহায়ক, যেমন গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা বা অম্বল।
সূত্র: ওয়েব এমডি ও হিন্দুস্তান টাইমস