প্রায় ৩,৬০০ বছর আগের একটি মমি থেকে, বিশ্বের প্রাচীনতম পনিরের একটি টুকরোর সন্ধান পাওয়া গেছে। যদিও ওই সময় মমির গলায় এটি গহনার একটি টুকরো হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, এখন বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন যে এটি আসলে পনিরের একটি টুকরা।
গত বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের জিয়াওহে কবরস্থান থেকে ৩,৬০০ বছর পুরনো একটি কফিন খোলা হয়, যেখানে ছিল একটি তরুণীর মমি। মমির গলায় আটকে থাকা পদার্থটির পরীক্ষা করা হলে, বিজ্ঞানীরা সেটিকে বিশ্বের প্রাচীনতম পনির হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের প্যালিওজেনেটিস্ট কিয়াওমি ফু স্কাই নিউজের অংশীদার নেটওয়ার্ক এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, পনির সাধারণত নরম হয়ে থাকে, কিন্তু এটি তেমন নয়। এটি এখন শুষ্ক, ঘন এবং কঠিন ধুলায় পরিণত হয়েছে। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন যে তরুণীর কফিনটি বের করার সময় তারিম বেসিন মরুভূমির শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে এটি ভালভাবে সংরক্ষিত ছিল।
পনির উৎপাদনের ইতিহাস অনেক প্রাচীন, এবং গবেষকরা জানিয়েছেন যে গাঁজানো দুগ্ধের উৎপত্তির ইতিহাস মূলত প্রাচীনত্বে হারিয়ে গেছে। এনবিসি নিউজকে ফু বলেছেন, তিনি এবং তার দল জিয়াওহে কবরস্থানের তিনটি সমাধি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এসব নমুনাতে হাজার বছর ধরে ব্যাকটেরিয়ার বিবর্তন শনাক্ত করতে ডিএনএ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে।
নমুনাগুলো তখন কেফির পনির হিসেবে চিহ্নিত করা হয়, যা কেফির দানা ব্যবহার করে দুধ গাঁজন করে তৈরি করা হয় এবং এতে ছাগল ও গরুর দুধের ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। গবেষকরা বলছেন, এই পুরানো কেফির পনিরের নমুনাগুলো ৩,০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংরক্ষিত বিভিন্ন দুগ্ধের মিশ্রণে তৈরি করা হয়েছিল, যা ব্রোঞ্জ যুগের জিয়াওহে মানুষদের দ্বারা উৎপাদিত হয়। তারা মিশ্র জীবনধারা এবং বিভিন্ন কৌশলের অধিকারী ছিলেন।
পনিরটি বিষমুক্ত কিনা এবং ফু এটি পরীক্ষা করার চেষ্টা করবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার কোনো উপায় নেই।