বারনই নদীতে অবৈধ সুতি জাল, রাজশাহীর পবার বারনই নদী থেকে অবৈধ সুতি জালের বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে পবা উপজেলার সুবিপাড়া এবং মোহনপুর উপজেলার মৌপাড়া গ্রাম ঘেঁষে বয়ে চলা এই নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান।
প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে অসাধু ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে পোনা ও মা মাছ নিধনের জন্য নদীতে অবৈধ সুতি জাল ব্যবহার করছেন। নদীর বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ সুতি জাল ও রিং জাল দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা হচ্ছে, যা শুধু মাছ নয়, জলজপ্রাণির জন্যও বিপজ্জনক।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর মাঝে মাঝে এই কার্যকলাপের বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে। কিছু জেলে এবং জেলে নয় এমন ব্যক্তিরা অবৈধ রিং জাল, কাপাজাল, ভাসা জাল, কারেন্ট জাল এবং সুতি জাল ব্যবহার করে মাছ শিকার করছেন। ফলে, এসব নিষিদ্ধ জালে প্রতিদিন অসংখ্য পোনা এবং মা মাছ ধরা পড়ছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে বাঁশের ব্যারিকেট দিয়ে ঘেরাও করা হয়, যা মাছের জন্য একটি মারাত্মক ফাঁদ হয়ে উঠছে এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে।
বারনই নদীতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের রাসায়নিক বর্জ্যের কারণে পানি বিষাক্ত হয়ে যায়, যা মাছের সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে। বর্ষার সময় নদীতে স্রোত থাকলেও মাছের উপস্থিতি কম থাকে, এবং মাছ ছাড়ার পর পোনা মাছগুলো মারা যায়। তবুও, অবৈধ সুতি জাল দিয়ে মাছ নিধন অব্যাহত রয়েছে।
এক স্থানীয় মৎস্যজীবী বলেন, “আমরা প্রজন্ম থেকে মৎস্যজীবী। মাছ ধরে আমাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। কিন্তু সম্প্রতি প্রভাবশালী মহলের জোরে নিষিদ্ধ এই সুতি জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে।”
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, সুতি জাল ব্যবহার বেআইনি। অভিযোগ পাওয়ার পর জালগুলো অপসারণ করা হয়েছে এবং সেগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান জানান, বারনই নদীতে অবৈধ সুতি জালের বাঁধ দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছিল। খবর পেয়ে এই বাঁধ অপসারণ করা হয়। অভিযানে পবা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ও পবা থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন এবং ২০ জন শ্রমিক এই অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। প্রশাসনের এই উদ্যোগকে স্থানীয় জনগণ অভিনন্দন জানিয়েছেন।