বিচার ছাড়া সংস্কার সম্ভব নয়,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রশ্ন তুলেছেন, যারা ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে, তাদের বিচার না করে কীভাবে সংস্কার করবেন? তিনি বলেন, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগের সংস্কার করার প্রস্তাব করা হয়েছে, কিন্তু শেখ হাসিনার দোসররা যেখানে দায়িত্বে আছেন, সেখানে এই সংস্কার বাস্তবায়ন কীভাবে সম্ভব? শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীরের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, “বিচার বিভাগ এবং পুলিশ প্রশাসনে শেখ হাসিনার দোসররা এখনও রয়েছেন। তাদের হাত ধরেই লাশের পাহাড় গড়ে উঠেছে। তারা এখনো ক্ষমতায় আছেন, এবং সংস্কারের পথে প্রধান বাধা সৃষ্টি করবেন। শেখ হাসিনা তাদের লালন-পালন করেছেন, এবং তারাই সরকারের সুবিধাভোগী।”
তিনি আরও বলেন, “মাফিয়া, সন্ত্রাসী, টাকা পাচার—এসব অপরাধের সঙ্গে শেখ হাসিনার নাম জড়িত। এখন সময় এসেছে দেশে প্রকৃত সংস্কার আনার। বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নির্বাচন হয়নি, বরং মোটা অংকের টাকা দিয়ে নমিনেশন নিয়ে তারা নির্বাচিত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে দেশে কোনো সংস্কার কার্যকর হবে না।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব এদের বাতিল করুন, তা না হলে সংস্কারের কাজ এগিয়ে নিতে পারবেন না। প্রশাসনে থাকা এসপি, ডিসি—তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা যাবে।”
ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “ভারত আমাদের পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র। কিন্তু কেন আমাদের মাথা নত করতে হবে? ভারতে বিরুদ্ধ কথা বললেই আওয়ামী লীগের দোসররা ক্ষুব্ধ হয়। শেখ হাসিনার পুলিশের হাতে এত মানুষ নিহত হলেও, ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছে। আমাদের দেশের অন্যায়কারীকে যদি ভারত আশ্রয় দেয়, তাহলে দিল্লির বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার কি আমাদের নেই? বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পৃথিবীর সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্ত, যেখানে বছরের পর বছর বাংলাদেশিদের ওপর গুলি চালানো হচ্ছে।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা কফিল উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, বিএনপি নেতা এবি এম রাজ্জাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মনির প্রমুখ।