বৃষ্টির পরেও গরম কেন কমছে না? রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম উপকূল এলাকায় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। রাজধানীতেও বৃষ্টির পরিমাণ কম নয়, এবং আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও বৃষ্টি হচ্ছে। তবে এত বৃষ্টির পরও গরম কমছে না। আবহাওয়াবিদদের মতে, এ সময়ের বৃষ্টির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এর কারণ।
রাজধানীতে গতকাল রাত ১২টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে, যেখানে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। কক্সবাজারে ১১৪ মিলিমিটার এবং নোয়াখালীর মাইজদীতে ১০৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এত বৃষ্টির পরও ভ্যাপসা গরম রয়ে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, দেশে বৃষ্টি সাধারণত দুই ধরনের হয়: “শীতল বৃষ্টি” এবং “উষ্ণ বৃষ্টি।” মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ শুরু হওয়ার আগে, অর্থাৎ জুন মাসের আগে যে বৃষ্টি হয়, তা “শীতল বৃষ্টি” বলে পরিচিত। ওই সময় প্রচণ্ড গরমের মধ্যে বৃষ্টির সৃষ্টি হয় এবং বৃষ্টির ফলে গরম হাওয়া শীতল হয়ে যায়।
মে মাসের শেষ বা জুনের শুরুতে দেশে মৌসুমি বায়ু প্রবাহ শুরু হলে “উষ্ণ বৃষ্টি” হয়। এ ধরনের বৃষ্টি বায়ুমণ্ডলের নিচ থেকে সৃষ্টি হয় এবং তাই তা পরিবেশকে দ্রুত ঠান্ডা করতে পারে না। ফলে ভিজলেও তেমন ঠান্ডা অনুভূত হয় না।
গতকাল থেকে যে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তা লঘুচাপের প্রভাবে নয়, বরং বায়ুস্তরের ওপরে ঘূর্ণিবাতাসের কারণে হচ্ছে। যদিও এটি লঘুচাপে পরিণত হতে পারে এবং আজও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। আগামীকাল শুক্রবারও বৃষ্টি হতে পারে, তবে তা কমে আসবে।
এ সময় যখন বায়ুস্তরের ওপরে ও ভূপৃষ্ঠে ঘূর্ণিবাতাস থাকে, তখন তাকে লঘুচাপ বলা হয়। বর্তমানে বায়ুস্তরের ওপরের দিকে ঘূর্ণিবাতাস সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু ভূপৃষ্ঠে তা নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই ঘূর্ণিবাতাস বর্তমানে দেশের মধ্যাঞ্চলে—ঢাকা ও ফরিদপুর এলাকায় বিদ্যমান রয়েছে। এটি ধীরে ধীরে পশ্চিমাঞ্চল কুষ্টিয়া ও রাজশাহীর দিকে চলে যাবে।
গতকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হলেও রংপুর ও সিলেট অঞ্চলে অপেক্ষাকৃত কম বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, বৃষ্টি আজসহ দুই দিন থাকতে পারে।