মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুইজ্জুকে, সরাতে কোনও বিরোধী দলই ভারতের সাহায্য চায়নি। আমেরিকার সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টের দাবি উড়িয়ে জানালেন মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাসিদ। তিনি জানিয়েছেন, মুইজ্জুকে সরাতে এই ধরনের কোনও পরিকল্পনাই হয়নি মলদ্বীপে। যদি কেউ এ বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করেও থাকেন, ভারতের সাহায্য চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ ভারত মলদ্বীপের গণতন্ত্রকে সম্মান করে। কখনওই এই ধরনের পরিকল্পনাকে প্রশ্রয় দেবে না নয়াদিল্লি, দাবি নাসিদের।
সমাজমাধ্যমে নাসিদ লিখেছেন, ‘‘ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনটি আমি পড়লাম। কিছু মানুষ সবসময়েই ষড়যন্ত্র করেন। কিন্তু মুইজ্জুকে সরানোর জন্য কোনও গুরুতর পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে আমার জানা নেই। এই ধরনের পরিকল্পনাকে কখনওই ভারত প্রশ্রয় দেবে না। কারণ ভারত সবসময় মলদ্বীপের গণতন্ত্রকে সম্মান করে এসেছে। কখনও তারা আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপও করেনি।’’
আমেরিকার দৈনিকের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ২০২৪ সালের গোড়ায় মুইজ্জুকে ‘ইমপিচ’ (পদ থেকে সরানো) করার জন্য ভারতের সাহায্য চেয়েছিল মলদ্বীপের বিরোধী দল মলদিভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি)। নয়াদিল্লির কাছ থেকে নাকি তারা ৬০ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৫১ হাজার কোটি টাকারও বেশি) সাহায্য চেয়েছিল। ওই টাকার মাধ্যমে মলদ্বীপের পার্লামেন্টের ৪০ জন সদস্যকে ঘুষ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলেও দাবি করে আমেরিকার দৈনিক। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। কারণ, মুইজ্জুর বিপক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সদস্য জোগাড় করা যায়নি।
সোমবার প্রকাশিত এই রিপোর্ট নিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। তবে সরকারি সূত্র মারফত খবর, এই ধরনের অভিযোগকে অস্বীকার করছে নয়াদিল্লি। উল্টে, মলদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক বোঝাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় বার শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে মুইজ্জুর উপস্থিতির উদাহরণ টানা হচ্ছে। ওই সফরে এসে মুইজ্জুও জানিয়েছিলেন, ভারতের ক্ষতি হয়, এমন কিছু করবে না মলদ্বীপ।
২০২৩ সালের শেষ দিকে মলদ্বীপের ক্ষমতায় আসেন মুইজ্জু। তাঁর আগের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম সোলি ভারতের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু মুইজ্জু ‘চিন ঘনিষ্ঠ’। মলদ্বীপে তিনি ক্ষমতাতেও এসেছেন ভারতের বিরোধিতা করেই। তাঁর ক্ষমতায় আসার পর ভারতের সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদীর লক্ষদ্বীপ সফরকে কেন্দ্র করে মলদ্বীপের মন্ত্রীদের কটাক্ষের পর ভারত থেকে মলদ্বীপ বয়কটের ডাক ওঠে। অনেক পর্যটক টিকিট বাতিল করেন। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্র। পরে দুই দেশের সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তার মাঝেই প্রকাশ্যে আসে আমেরিকার দৈনিকের রিপোর্ট।