চলতি মাসের প্রথম ১৪ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধপথে ১১৬ কোটি ৭২ লাখ (১.১৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসেবে)। এর আগে, গত আগস্ট মাসের প্রথম ২৮ দিনে দেশে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স আসে দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, ধারাবাহিকভাবে রেমিটেন্স বাড়ার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। মঙ্গলবার সকালে এক বার্তায় তিনি জানান, সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভের পরিমাণ ২৪.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, তবে আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী এটা ২০ বিলিয়নের কাছাকাছি।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী, নিট রিজার্ভ গ্রস বা মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিয়ে গণনা করা হয়। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে, আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের পর থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই তথ্য প্রকাশ করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯.৪৪ বিলিয়ন ডলার।
রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ার কথা উল্লেখ করে শিখা বলেন, রেমিটেন্স বৃদ্ধির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষয়রোধ করা সম্ভব হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে রেমিটেন্সে ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জুলাই ও আগস্টের প্রবৃদ্ধি হিসাব করলে, এটি প্রায় ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, আন্তঃব্যাংক ফরেন এক্সচেঞ্জ সক্রিয় করা হয়েছে, যার ফলে ব্যাংকগুলো নিজেরা ডলার কেনাবেচা করতে পারছে, এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। বর্তমানে ডলারের দাম ১১৮ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে এবং কার্ব মার্কেটের দামের সঙ্গে ব্যাংকিং চ্যানেলের দামের পার্থক্য ১ শতাংশের চেয়ে কম।
আহসান এইচ মনসুর, যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্ব নিয়েছেন, জানিয়েছেন যে তিনি রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করেছেন, যার ফলে রিজার্ভ বাড়বে এবং কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৯ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৮১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৩০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। আগস্ট মাসে দেশে ২.২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ২৬ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকার রেমিটেন্স এসেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১.৯১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২ হাজার ৩৯২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ রেমিটেন্স এসেছে, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। এ পরিমাণ রেমিটেন্স দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০২০-২১ অর্থবছরে, যখন ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছিল।