13 C
Los Angeles
Thursday, January 2, 2025

বিশেষ সংবাদ Featured News

৩৮ বছর ধরে বিষাক্ত তেজস্ক্রিয়তার মধ্যে বাস, চেরনোবিলের পথকুকুরেরা এখন ‘সুপারডগ’!

বিজ্ঞানীদের ধারণা, চেরনোবিলের বিষাক্ত পরিবেশে মানিয়ে নিয়েছে...

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ প্রমোদতরি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ প্রমোদতরি,আধুনিক সময়ের প্রমোদতরিগুলো...

রোহিত অবসর নিলে টেস্টে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক কে? দৌড়ে তিন ক্রিকেটার

খেলাধুলারোহিত অবসর নিলে টেস্টে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক কে? দৌড়ে তিন ক্রিকেটার

সিডনি টেস্টের পরেই কি অবসর নেবেন রোহিত শর্মা? তেমনটাই শোনা যাচ্ছে। যদি তা-ই হয় তা হলে টেস্টে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক কে? দৌড়ে রয়েছেন তিন ক্রিকেটার।

রোহিত অবসর,দেওয়াল লিখন ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। ব্যাটিং ফর্ম প্রভাব ফেলেছে রোহিত শর্মার অধিনায়কত্বেও। দলের হার আরও চাপ বৃদ্ধি করছে রোহিতের উপর। তবে কি সিডনি টেস্টের পরেই অবসর নেবেন রোহিত? তেমনটাই শোনা যাচ্ছে। যদি তা-ই হয় তা হলে টেস্টে ভারতের পরবর্তী অধিনায়ক কে? পার্‌থে রোহিতের অবর্তমানে ভারতের অধিনায়কত্ব করেছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। তিনি ভারতের সহ-অধিনায়ক। পার্‌থে বুমরাহ জেতালেও পাকাপাকি ভাবে কি তাঁর হাতেই যাবে নেতৃত্ব? দৌড়ে রয়েছেন তিন জন ক্রিকেটার। অর্থাৎ, বুমরাহ ছাড়া আরও দুই ক্রিকেটারের সুযোগ রয়েছে ভারতের অধিনায়ক হওয়ার।

জসপ্রীত বুমরাহ—

ভারতের পরবর্তী টেস্ট অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে বুমরাহ। তার সবচেয়ে বড় কারণ, তাঁর ফর্ম। পার্‌থে বুমরাহ দেখিয়েছেন, ভাল অধিনায়ক হওয়ার সব গুণ তাঁর মধ্যে রয়েছে। সেখানেও প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫০ রানে অল আউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু তাতে হতাশ হয়নি দল। উল্টে অস্ট্রেলিয়াকেও চাপে ফেলে দিয়েছিল তারা। তাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন বুমরাহ। পার্‌থ টেস্টের পরে বুমরাহের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা। দলের ক্রিকেটারেরাও জানিয়েছিলেন, বুমরাহ কোনও সময় হতাশ হননি। বার বার ক্রিকেটারদের তাতিয়েছেন। সেখান থেকেও যে ম্যাচ জেতা যায় সেই তাগিদ দিয়েছেন।

ভারতকে সব ফরম্যাট মিলিয়ে মোট পাঁচটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন বুমরাহ। শুরুটা হয়েছিল টেস্টেই। ২০২২ সালে রোহিতের কোভিড হওয়ায় বার্মিংহ্যামে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ টেস্টে বুমরাহ অধিনায়কত্ব করেন। শুরুটা ভাল হয়নি। প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থেকেও হারতে হয়েছিল। যদিও পার্‌থে জিতে নজর কেড়েছেন তিনি। ২০২৩ সালে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও বুমরাহ ভারতের অধিনায়ক হয়েছিলেন। প্রথম দুই ম্যাচ জেতে ভারত। তৃতীয় ম্যাচ খেলা হয়নি। বৃষ্টিতে ভেস্তে গিয়েছিল।

দলের বোলিং আক্রমণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বুমরাহ। চলতি সিরিজ়ে চারটি টেস্টে ৩০টি উইকেট তিনি নিয়েছেন, যা দুই দেশের বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক। প্রতি ইনিংসে ২০ ওভারের বেশি বল করছেন। একের পর এক স্পেল করছেন। দেখে মনে হচ্ছে না, ক্লান্তি গ্রাস করেছে তাঁকে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও এক জন পেসার। তিনি দলকে ভাল নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অতীতে কপিল দেব, ইমরান খানদের ক্ষেত্রেও তা দেখা গিয়েছে। সেই পথে গিয়ে বুমরাহ দলের পরবর্তী অধিনায়ক হতেই পারেন।

তবে বুমরাহের অধিনায়ক হওয়ার পথে একটিই বাধা রয়েছে। টেস্টে পেসারদের টানা খেলতে সমস্যা হয়। বিশেষ করে বুমরাহের মতো পেসারদের ক্ষেত্রে বোর্ড আগেও বিশ্রাম-নীতি নিয়ে চলেছে। অর্থাৎ, কম গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়ে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। বুমরাহের চোটের ইতিহাস রয়েছে। একটা সময় দীর্ঘ কয়েক মাস খেলার বাইরে ছিলেন তিনি। তাই তাঁকে নিয়ে কোনও ঝুঁকি নেয় না বোর্ড। বিশ্রাম দিয়ে খেলানো হয় তাঁকে। কিন্তু এক জন অধিনায়ক বিশ্রাম নিলে দলকে নেতৃত্ব দেবেন কে? কামিন্স বা অতীতে কপিল, ইমরানেরা টানা ম্যাচ খেলতেন। সেটা বুমরাহ কি পারবেন? কারণ, অধিনায়ক বুমরাহের থেকে সেরা ফর্মের বোলার বুমরাহকে ভারতের বেশি প্রয়োজন। সেই দিকটাও দেখতে পারেনি নির্বাচকেরা।

ঋষভ পন্থ—

ভারতীয় দলে নিজের জায়গা পাকা হওয়ার পর পন্থকে দলের ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসাবে ধরা হত। মাঝে দুর্ঘটনার পরে ১৪ মাস ক্রিকেটের বাইরে থাকায় তাতে ভাটা পড়ে। আবার সেই জল্পনা শুরু হয়েছে। আইপিএলে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা রয়েছে পন্থের। তবে জাতীয় দলে এখনও পর্যন্ত এই দায়িত্ব পাননি তিনি। যত দিন তিনি খেলছেন, তত দিন টেস্টে অন্য কাউকে উইকেটের পিছনে দস্তানা হাতে দেখার সম্ভাবনা প্রায় নেই। ফলে পন্থের ধারাবাহিক ভাবে খেলা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। দুর্ঘটনায় চোট পেয়ে ফেরার পরে এখন তাঁকে শারীরিক ভাবে আরও ভাল দেখাচ্ছে। ওজন আগের থেকে কমিয়েছেন। ফলে ফিটনেস নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন পন্থ। তাঁর মানসিকতা আক্রমণাত্মক। তাই অধিনায়কের দৌড়ে রয়েছেন তিনি।

তবে এই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের উল্টো দিকে পন্থের সবচেয়ে বড় খামতি তাঁর উইকেট ছুড়ে দেওয়ার প্রবণতা। চলতি সিরিজ়ে বার বার সেটা দেখা গিয়েছে। প্রায় প্রতিটি ইনিংসে শুরুটা করেছেন তিনি। ২৫-৩০ রান পর্যন্ত ধৈর্য ধরে খেলেছেন। তার পরে এমন একটা শট খেলে আউট হয়েছেন যা অপরাধ। মেলবোর্নে দুই ইনিংসেই সেই ছবি দেখা গিয়েছে। প্রথম ইনিংসে স্কট বোলান্ডের বলে ‘স্কুপ’ খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন পন্থ। তাঁকে দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি সুনীল গাওস্কর। পন্থকে ‘স্টুপিড’ বলেছেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসেও ভাল খেলছিলেন তিনি। ম্যাচ বাঁচানোর দায়িত্ব ছিল পন্থের কাঁধে। সেই সময় ট্রেভিস হেডের বলে অহেতুক বড় শট খেলতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এসেছেন তিনি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে রোহিতও জানিয়েছেন, পন্থকে শিখতে হবে তাঁর কাছ থেকে দল কী চাইছে? জানা গিয়েছে, পন্থের উপর ক্ষুব্ধ কোচ গৌতম গম্ভীর। অনেকেই দলের হারের জন্য পন্থের দিকেই আঙুল তুলছেন।

অধিনায়ক হওয়ার জন্য প্রয়োজন পরিণত মানসিকতা। ম্যাচ কোন পরিস্থিতিতে রয়েছে সেটা দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া। বিশেষ করে টেস্টে সেটা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পন্থ সেই মানসিকতা দেখাতে পারছেন না। সেখানেই পিছিয়ে পড়ছেন তিনি। সেই কারণেই হয়তো এখনও জাতীয় দলের হয়ে কোনও ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে দেখা যায়নি তিনি। সিডনির পরে কি সেটা দেখা যাবে?

লোকেশ রাহুল—

ভারতের টেস্ট দলের পরবর্তী অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন রাহুলও। দীর্ঘ দিন ধরে ভারতীয় দলে খেলছেন। দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে এক জন। অস্ট্রেলিয়ায় যে কয়েক জন ব্যাটারকে ভাল দেখিয়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন রাহুল। ওপেন থেকে শুরু করে মিডল অর্ডার, ব্যাটিং অর্ডারে সব জায়গায় খেলতে পারেন। এ রকম এক জনের হাতে দলের দায়িত্ব দিতেই পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।

বুমরাহ ও পন্থের থেকে রাহুলের অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতাও বেশি। ভারতকে মোট ১৬টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। জিতেছেন ১১টি। হেরেছেন পাঁচটি ম্যাচ। তার মধ্যে টেস্টে তিনটি ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন রাহুল। ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলেও পরের দু’টি টেস্টে জিতেছেন তিনি। ১২টি এক দিনের ম্যাচের মধ্যে জিতেছেন আটটি। হেরেছেন চারটি। একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও নেতৃত্ব দিয়েছেন রাহুল। সেটি জিতেছেন তিনি। অর্থাৎ, তিনটি ফরম্যাটেই অধিনায়কত্ব করেছেন এই ব্যাটার। পাশাপাশি আইপিএল তো রয়েছেই।

তবে রাহুলের ক্ষেত্রেও একটি বিষয় তাঁর বিরুদ্ধে যাচ্ছে। সেটি হল রাহুলের চোটপ্রবণতা। মাঝেমধ্যেই চোটের কারণে দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। ফলে ধারাবাহিক ভাবে খেলতে পারেন না। দলের সিনিয়র ক্রিকেটার হয়েও দলে জায়গা পাকা নয় তাঁর। দেশের মাটিতে নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁকে বসিয়ে সরফরাজ় খানকে খেলানো হয়েছে। যিনি ধারাবাহিক ভাবে প্রথম একাদশে খেলতে পারেন না, তাঁকে কি অধিনায়ক করার কথা ভাববে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এই একটা প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles