লাল শাপলার বিল,বর্ষার পর পর একটানা ঝুম বৃষ্টিতে নদী-নালা, খাল-বিলে পানির স্তর বেড়ে যায়। এই সময় বিভিন্নস্থানে দেখা যায় বর্ষাকালীন ফুলের সমারোহ। বিলে ফোটা জনপ্রিয় ফুলগুলোর একটি শাপলা। দেশের বিভিন্ন জায়গায় অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের নির্দশন হিসেবে অগণিত শাপলার সমারোহ দেখা যায়। প্রতিবছর কিছু নির্দিষ্ট জায়গা এই শাপলার বাহারে সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। তখন প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের ভিড় জমে যায় এই সব দর্শনীয় স্থানে।
এরকমই শাপলাফুলের জন্য বহুল আলোচিত এক স্থান হলো বরিশালের সাতলা বিল। বিভাগীয় শহর বরিশালের সদর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরেরএই বিশাল বিলে শাপলার সমারোহ নজরে পড়ে। উজিরপুর উপজেলার উত্তর সাতলা গ্রাম এবং আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ও খাজুরিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে বিছিয়ে আছে শাপলার বিল। তবে সাতলার এই বিখ্যাত বিল স্থানীয়দের কাছে ‘লাল শাপলার বিল’ নামেই বেশি পরিচিত।
প্রতিবছরই নয়নাভিরাম এ বিলে ঘুরতে আসেন দর্শনার্থীরা। স্থানীয়দের আধিক্য থাকলেও, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেও লাল-গোলাপি-মেরুন রঙের শাপলার গালিচার চাক্ষুষ উপলব্ধি করতে মানুষ আসেন। শুধু তাই নয়, প্রায় সময় দেশের বাইরের পর্যটকরাও আসছেন শাপলার বিল দেখতে।
গত শনিবার (০৫ অক্টোবর) বেশ কয়েকজন চীনা নাগরিক শাপলার বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছিলেন। তারা এখান থেকে সরাসরি ভিডিও কলে চীনে নিজ পরিবার পরিজনকে বরিশালের শাপলা বিলের দৃশ্য ধারণ করেছেন। দৃশ্য দেখে সুদূর চীন থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকদের পরিজনেরাও বরিশালের ‘শাপলা বিল’ দেখতে আসর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন ।প্রাকৃতিকভাবেই সাতলার বিলটির জন্ম।
পর্যটকদের কাছে অল্প সময়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বিলটি। প্রতিবছর নয়নাভিরাম এই বিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে আসেন হাজার হাজার দর্শনার্থীরা।গোলাপি আর সবুজের মাখামাখি দূর থেকেই চোখে পড়বে। কাছে গেলে ধীরে ধীরে সবুজের পটভূমিতে গাঢ় গোলাপির অস্তিত্ব চোখ জুড়িয়ে দেবে। বিস্তৃত বিলের জলে ফুটে থাকে কোটি কোটি শাপলার । জাতীয় ফুল শাপলার গাঢ় গোলাপি রং বলে স্থানীয়ভাবে এটিকে লাল শাপলা হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়।
প্রাকৃতিক আপন নিয়মে সৃষ্ট সাতলা-বাগদা এলাকা নিকট অতীতেও ছিল চরম অভাবী এলাকা। শাপলা-সালুক খেয়েই বছরের বেশিরভাগ সময় এ প্লাবন ভূমিতে বসবাসকারী মানুষ ক্ষুন্নিবৃত্তি করত।পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে তিনটি পোল্ডারে ‘সাতলা-বাগদা সেচ প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরে এখানে বোরো ধান সহ অন্যান্য ফসলের মুখ দেখেছে এলাকাবাসী।
ফলে চীর অভাবী এলাকার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। সাথে মাছের উৎপাদনও বাড়ছে। এখানে মাছ রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চালান যাচ্ছে। সাথে বিশাল শাপলা বিলের শাপলা বিক্রি করেও এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর সংসার চলছে।
সুত্র: barta24