সুনামগঞ্জে অগ্নিকাণ্ড,হে আল্লাহ, এই কী গজব পড়ল যে আমার মেয়ে, জামাই আর চার নাতি-নাতনি আগুনে পুড়ে মরতে হলো? এখন আর বাতি জ্বালানোর মতো কেউ রইল না। এমনই বিলাপ করছিলেন অগ্নিকাণ্ডে নিহত পলি আক্তারের মা মরিয়ম বিবি (৫৫)।
ঘটনাটি সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের সীমের খাল গ্রামে। সোমবার মধ্যরাতে পলি আক্তার (৩৫), তার স্বামী এমারুল মিয়া (৪৫) ও তাদের চার সন্তান—পলাশ মিয়া (১০), ফরহাদ মিয়া (৮), ফাতেমা আক্তার (৫), ও ওমর ফারুক (৩) অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো গ্রাম শোকস্তব্ধ।
গ্রামের এক জেলে বাবুল মিয়া জানান, এমারুল মিয়া হাওরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের মধ্যে কোনো ঝগড়া-বিবাদ বা ঋণ ছিল না। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো, তা কেউই বুঝতে পারছে না। প্রত্যক্ষদর্শী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি রাত্রি ১২টার দিকে হাওর থেকে মাছ ধরে ফিরছিলাম। তখন দেখি, এমারুলের ঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। চিৎকার করে সাহায্য চাইলে গ্রামবাসী এসে আগুন নিভিয়ে ফেলে, কিন্তু তখনও ছয়জনের লাশ উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ঘরে বসবাস করছিল। অগ্নিকাণ্ডের পরপরই স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সিলেট থেকে সিআইডি ও পিবিআইয়ের টিম আলামত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। নিহতদের লাশ সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন জানান, অগ্নিকাণ্ডে একই পরিবারের ছয়জনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং দাফনের জন্য অর্থ সহায়তা দেওয়া হবে।