চার বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ,গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত না করেই খুলনায় তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছে সরকার। তবে এখন পর্যন্ত এই কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাস সরবরাহ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চারটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে গ্যাস সরবরাহ করতে গিয়ে খুলনার তিনটি সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর মন্ত্রিত্ব শেষ হওয়ার কিছুদিন আগে এই চারটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। একটির ক্ষেত্রে সংযোগ দেওয়া হয় ২০২৩ সালের শেষ দিকে। তালিকায় খুলনার তিনটি সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নাম থাকলেও সেগুলোকে গ্যাস দেওয়া হয়নি, ফলে রূপসাসহ এসব কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে, কারণ রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট কেন্দ্রসহ আরও দুটি কেন্দ্র এডিবির অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে।
পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে ২০২০ সালের মধ্যে এলএনজি সরবরাহের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। সেই নিশ্চয়তার ওপর ভিত্তি করেই এডিবি ঋণ প্রদান করে এবং প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২০২৭ সালের আগে কেন্দ্রগুলোতে গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে না বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে রূপসাসহ অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে অন্তত তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান এ প্রকল্পগুলো নিয়ে সমালোচনা করেছেন এবং খুলনা সফর করে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর অবস্থা সরেজমিনে দেখেছেন। এডিবির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তিনি এ বিষয়ে বৈঠক করেন। তিনি জানান, গ্যাসের সংকট কাটাতে ভোলা থেকে খুলনা পর্যন্ত পাইপলাইন নির্মাণের প্রয়োজন। তবে এই পাইপলাইন প্রকল্পেও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
খুলনার রূপসা ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০১৮ সালে নির্মাণ শুরু হয় এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টেস্টিং-কমিশনিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে বাণিজ্যিক উৎপাদন ২০২৭ সালের আগে সম্ভব হবে না।