ফ্রিজে রাখা খাবার থেকে ইউরিন ইনফেকশন,বিশ্বজুড়ে ইউরিন ইনফেকশন বা মূত্রনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। গত ৩৫ বছরে এই সংক্রমণের হার ও এর ফলে মৃত্যুর সংখ্যাও আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত, প্রাণীর দেহে নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ রেচনতন্ত্রের মাধ্যমে পরিশোধিত হয়ে অতিরিক্ত পানির সঙ্গে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। আমাদের খাদ্যতালিকার সঠিকতা এই রেচন প্রক্রিয়ার উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গেছে, ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবার খাওয়ার কারণে মূত্রনালীর সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই) হতে পারে। ওয়ান হেলথের এক প্রতিবেদনে বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন যে, ই-কোলাই দ্বারা দূষিত মাংস ইউরিন ইনফেকশন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিশেষ করে মুরগি ও টার্কির মাংসে এক্সটেন্ডেড-স্পেকট্রাম বিটা-ল্যাকটামেজ (ESBL) ব্যবহৃত হয়ে থাকে, যা সঠিকভাবে রান্না না হলে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। এই ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটাতে পারে এবং পরবর্তীতে রেচনতন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে।
এছাড়া সাধারণত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অবহেলার কারণে ইউরিন ইনফেকশন দেখা যায়। তবে ফ্রিজে রাখা খাবারের মাধ্যমে এই নতুন সংক্রমণের কারণটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ইউরিন ইনফেকশন প্রতিরোধে নিচের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করা যেতে পারে:
১. পোল্ট্রি এবং মাংস ভালোভাবে সিদ্ধ করে যথাযথ তাপে রান্না করতে হবে যাতে ব্যাকটেরিয়া সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়।
২. মাংস ও সবজির জন্য আলাদা কাটিং বোর্ড, ছুরি এবং পাত্র ব্যবহার করতে হবে। কাঁচা মাংস কাটার পর অবশ্যই সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
৩. পচনশীল খাবার দীর্ঘদিন ধরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। যেসব খাবার ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে সংরক্ষিত থাকে, সেগুলোতে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিতে বাধা দেওয়া যায়। তবে তবুও কিছু ব্যাকটেরিয়া থেকে যেতে পারে, তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই খাবার খেয়ে ফেলা উচিত।
এই ধরনের সতর্কতা মেনে চললে ইউরিন ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস