শেখ হাসিনার বর্তমান অবস্থান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে কোথায় আছেন, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মন্ত্রণালয়ে আজ মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর এসেছে যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে গেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা দিল্লিতে খোঁজ করেছি, সংযুক্ত আরব আমিরাতেও খোঁজ করেছি। কনফারমেশন অফিশিয়ালি কেউ দিতে পারেননি।’
ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতারা ট্রাভেল পাস নিয়ে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁদের ট্রাভেল পাস ইস্যু করবে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ মিশন ট্রাভেল পাস ইস্যু করতে পারে শুধু দেশে ফেরার জন্য, অন্য দেশে যাওয়ার জন্য নয়। অন্য দেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্টের প্রয়োজন পড়ে।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, তাঁরা যদি দেশে ফিরতে চান, ট্রাভেল পাস ইস্যু করা যেতে পারে এবং তাঁরা দেশে ফিরে আসতে পারেন। আদালত চাইলে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।
২০ হাজার ভিসা আবেদন নিষ্পত্তির আশ্বাস ইতালি দূতাবাসের
ঢাকার ইতালি দূতাবাস ডিসেম্বরের মধ্যে ২০ হাজার ভিসা আবেদন নিষ্পত্তি করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে অনেক ভিসা আবেদন আটকে আছে। ২০ হাজার ভিসা কেস রোম থেকে ক্লিয়ার্ড (নিষ্পত্তি) হয়েছে। সে ভিসাগুলো দেওয়ার অগ্রগতি খুব কম। ইতালি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে, উনি আশ্বস্ত করেছেন যে ডিসেম্বরের মধ্যে এ ভিসাগুলো দিয়ে দিবেন। এ ছাড়া ইতালি দূতাবাস অতিরিক্ত দুই-তিনজন কর্মকর্তা নিয়ে আসছেন কাজ করতে, তাঁরা এলে কাজের গতি বাড়বে।
ইতালি দূতাবাসে প্রায় ৪০ হাজার ভিসা আবেদন জমা আছে। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষারত ইতালির ওয়ার্ক ভিসাপ্রত্যাশীদের মধ্যে থেকে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সাক্ষাৎকালে ভিসা ইস্যুকরণে দীর্ঘসূত্রতার কারণে তাদের নানাবিধ ভোগান্তিসহ এ সমস্যার দ্রুত সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার অনুরোধ জানান ভিসাপ্রত্যাশীরা।
তাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা প্রতিনিধিদলকে মিছিল-মিটিং ও ঘেরাও কর্মসূচি না করার জন্য বলেছি। এগুলো করলে ভিসাপ্রত্যাশীদের কোনো লাভ হবে না, দেশেরও কোনো লাভ হবে না। কারণ, তারা যদি ভয় পায়, তাহলে বরং আরও অফিসার চলে যাবেন। দেখা যাবে, ভিসা ইস্যু হচ্ছেই না। উপদেষ্টা বলেন, আমরা ইতালি দূতাবাসকে চাপ দিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হবে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভিসা দেওয়া বা না দেওয়া একটি দেশের সার্বভৌম অধিকার। ভিসা কেন দেওয়া হয়েছে বা দেওয়া হয়নি, সেটা আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি না।’
লেবানন থেকে প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘লেবানন থেকে যাঁরা ফিরে আসতে চান, তাঁদের তালিকা করতে বলা হয়েছে। তাঁদের (প্রবাসীদের) বলা হয়েছে, ওয়ার জোন (যুদ্ধকবলিত এলাকা) থেকে তাঁরা যেন একটু উত্তরে সরে যান। আমরা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) অনুরোধ করেছি, তারা যেন ফ্লাইটের ব্যবস্থা করে দেয়, যাতে তাঁরা চলে আসতে পারেন।