19.8 C
Los Angeles
Tuesday, October 22, 2024

বিশেষ সংবাদ Featured News

00:04:00

আওয়ামী লীগের দেড় ডজন মন্ত্রী-এমপি বিএনপিতে যোগদানের চেষ্টা?

ঢাকা, ১৫ অক্টোবর ২০২৪:বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন...

চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের কাছে ফিরিয়ে দিচ্ছে যুক্তরাজ্য

চাগোস দ্বীপপুঞ্জ মরিশাসের,ভারত মহাসাগরে অবস্থিত সামরিক কৌশলগত...

আপনি আমার রাজা নন চিৎকার করে ব্রিটিশ রাজাকে বললেন অস্ট্রেলিয়ার সেনেটর

আন্তর্জাতিকআপনি আমার রাজা নন চিৎকার করে ব্রিটিশ রাজাকে বললেন অস্ট্রেলিয়ার সেনেটর

আপনি আমার রাজা নন চিৎকার করে ব্রিটিশ, অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে বিব্রতকর এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। দেশটির একজন আদিবাসী সেনেটর রাজাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যে, তিনি তার রাজা নন।

সফরের দ্বিতীয় দিনে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন রাজা চার্লস। তখন ওই ঘটনা ঘটে।

“এই ভূমি আপনার না, আপনি আমার রাজা নন,” রাজার সামনে গিয়ে চিৎকার করে বলেন আদিবাসী সিনেটর লিডিয়া থর্প।

স্বতন্ত্র সেনেটর মিজ থর্প প্রায় মিনিটখানেক ধরে এভাবে চিকিৎকার করতে থাকেন।

ওই সময় তিনি আরও অভিযোগও করেছেন যে, “তাদের (অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীরা) মানুষরা” গণহত্যারও শিকার হয়েছে।

পরে নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত এগিয়ে এসে তাকে ধরে পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে নিয়ে যায়।

এমন ঘটনার পর দ্রুত অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এরপর সফররত ব্রিটিশ রাজ দম্পতি পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে অপেক্ষমান মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

তবে আদিবাসী জ্যেষ্ঠ সদস্য ভায়োলেট শেরিডান বলেছেন, মিজ থর্পের আচরণ ছিল ‘অসম্মানজনক’ এবং ‘তার কথা আমার কথা নয়’। রাজা ও রানিকে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানিয়েছিলেন মিজ শেরিডান।

কমনওয়েলসভূক্ত দেশগুলোর একটি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, আনুষ্ঠানিকভাবে এখন যার প্রধান রাজা তৃতীয় চার্লস। তবে এই পদে পরিবর্তন আনা হবে কিনা, সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

গতবছর অভিষেকের পর প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া সফরে গেছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। EPA

অন্যদিকে, মিজ থর্প অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের একজন স্বতন্ত্র সেনেটর, যিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশটির সরকার ও আদিবাসীদের মধ্যে একটি চুক্তির পক্ষে কথা বলে আসছেন।

অস্ট্রেলিয়াই একমাত্র সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ যেখানে অনেক আদিবাসী ও টরেস স্ট্রেইট দ্বীপবাসীরা তাদের সার্বভৌমত্ব বা জমি রাজার হাতে তুলে দেয়নি।

এক সময়ের ব্রিটিশ উপনিবেশ অস্ট্রেলিয়াই একমাত্র দেশ, যার অনেক আদিবাসী ও টরেস স্ট্রেইট দ্বীপবাসীরা জোর দিয়ে বলেন যে, তারা তাদের সার্বভৌমত্ব বা ভূমি ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের হাতে তুলে দেননি।

ঘটনার পর সেনেটর মিজ থর্প বিবিসিকে বলেছেন যে, তিনি রাজার সামনে ওইভাবে চিৎকার করার মাধ্যমে একটি “স্পষ্ট বার্তা” দিতে চেয়েছেন।

তিনি বলেন, “সার্বভৌম হতে হলে এই ভূমি থেকেই (অস্ট্রেলিয়া) আপনাকে আসতে হবে।”

“তিনি (রাজা তৃতীয় চার্লস) এই দেশের নন,” বলেন ওই আদিবাসী সেনেটর।

তিনি মনে করেন যে, ভাষণ দেওয়ার সময় রাজা চার্লসের উচিৎ ছিল আদিবাসীদের সঙ্গে শান্তিুচুক্তির বিষয়ে আলোচনা করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টকে নির্দেশনা দেওয়া।

“আমরা এটার নেতৃত্ব দিতে পারি, আমরা এটা করতে পারি, আমরা আরও ভালো একটি দেশ হতে পারি,” বলছিলেন সেনেটর থর্প।

“কিন্তু আমরা উপনিবেশ স্থাপনকারী এমন মানুষের কাছে মাথা নত করতে পারি না, যার পূর্বপুরুষরা এখানে গণহত্যার সংঘটনের জন্য দায়ী,” বলেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে পতাকাহাতে অপেক্ষমান মানুষ

রাজা তৃতীয় চার্লসের সামনে চিৎকার করে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করার সময় সেনেটর থর্পের গায়ে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী একটি চাদর জড়ানো ছিল, যেটি পশুর চামড়া দিয়ে তৈরি।

এর আগে, ২০২২ সালে সেনেটর হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় ব্রিটেনের প্রয়াত রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে “ঔপনিবেশিক শাসক” হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন তিনি।

সফরের দ্বিতীয় দিনে পার্লামেন্টের অনুষ্ঠানে রাজা কিছুটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়লেও বাইরের পরিবেশ ছিল অন্যরকম।

পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে শত শত মানুষ রাজাকে দেখার জন্য সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছিল। অস্ট্রেলিয়ার পতাকা নেড়ে রাজাকে স্বাগতম জানিয়েছেন তারা।

“আমি খুব উত্তেজিত। আমি মনে করি ব্রিটিশ রাজপরিবার অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতিরই অংশ। তারা আমাদের জীবনের একটি বড় অংশ,” বলছিলেন জেমি কার্পাস।

অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সিজে অ্যাডামস বলেছেন, “তিনি (রাজা তৃতীয় চার্লস) ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান। কাজেই তিনি ক্যানবেরায় আসার পর এখানে যে আমেজ দেখা যাচ্ছে, সেটার অভিজ্ঞতা আপনাকে নিতেই হবে।”

মিজ থর্পকে আগেও ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে সরব দেখা গেছে। Reuters

তবে এসব মানুষের বাইরেও অল্পকিছু ভিন্নমতাবলম্বীদের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে সমবেত হতে দেখা গিয়েছে।

এর আগে, শনিবার অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছান রাজা তৃতীয় চার্লস। ২০২৩ সালে রাজা হিসেবে অভিষেকের পর কমনওয়েলথভুক্ত দেশে এটিই তার গুরুত্বপূর্ণ কোনো সফর।

শনিবার দেশটিতে পৌঁছানোর পর গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আদিবাসী প্রতিনিধিরাও রাজাকে স্বাগত জানান।

পরে ক্যানবেরার পার্লামেন্ট হাউসের গ্রেট হলেও তাকে দেশটির আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী সুর বাজিয়ে স্বাগত জানানো হয়।

আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐহিত্যবাহী রীতি ও প্রাকৃতিক জ্ঞানের প্রশংসা করেন রাজা।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “এই ধরনের ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান আমার ধারণা ও শিক্ষাকে আরও শক্তিশালী” হতে সাহায্য করেছে।

পার্লামেন্ট হাউসের ওই ভাষণে তিনি আরও বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় আমার (আগের) সফরগুলোতে আমি সেই সাহস ও আশা প্রত্যক্ষ করেছি, যা মাঝে মধ্যে জাতির দীর্ঘ ও কঠিন সময়েও সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে।”

এই ভাষণ শেষেই সেনেটর মিজ থর্প রাজার দিকে এগিয়ে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তবে বিষয়টি নিয়ে অবশ্য বাকিংহাম প্যালেস থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

উল্লেখ্য যে, ব্রিটেনের রাজা কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যে ১৪টির রাষ্ট্রপ্রধান। যদিও অস্ট্রেলিয়াসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশে তার এই ভূমিকা একেবারেই আলঙ্কারিক।

Source name: বিবিসি

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles