16.4 C
Los Angeles
Wednesday, December 18, 2024

বিশেষ সংবাদ Featured News

৩৮ বছর ধরে বিষাক্ত তেজস্ক্রিয়তার মধ্যে বাস, চেরনোবিলের পথকুকুরেরা এখন ‘সুপারডগ’!

বিজ্ঞানীদের ধারণা, চেরনোবিলের বিষাক্ত পরিবেশে মানিয়ে নিয়েছে...

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ প্রমোদতরি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ১০ প্রমোদতরি,আধুনিক সময়ের প্রমোদতরিগুলো...

শীতে কদর বেড়েছে খেজুর রসের

শীতে কদর বেড়েছে, আবহমান বাংলায় শীত মৌসুমে...

৩৮ শতাংশ মানুষ এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, কাকে ভোট দেবেন: বিআইজিডির জরিপ

জাতীয়৩৮ শতাংশ মানুষ এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, কাকে ভোট দেবেন: বিআইজিডির জরিপ

৩৮ শতাংশ মানুষ এখনো সিদ্ধান্ত নেননি, দেশে এখন নির্বাচন হলে কোন দলকে ভোট দেবেন, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি ৩৮ শতাংশ মানুষ। বাকি মানুষের ১৬ শতাংশ বিএনপিকে, ১১ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীকে এবং ৯ শতাংশ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া ৩ শতাংশ মানুষ অন্যান্য ইসলামী দল ও ১ শতাংশ জাতীয় পার্টিকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন।

শিক্ষার্থীদের তৈরি নতুন কোনো রাজনৈতিক দল হলে তাদের ভোট দেবেন ৪০ শতাংশ মানুষ (৩৯ শতাংশ পুরুষ, ৪৪ শতাংশ নারী)। ভোট দেবেন না বলে জানিয়েছেন ৪৪ শতাংশ মানুষ (৪৭ শতাংশ পুরুষ, ৩৬ শতাংশ নারী)।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) ‘পালস সার্ভের’ দ্বিতীয় ধাপের জরিপের ফলাফলে এমন চিত্র উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশে (পিআইবি) এক অনুষ্ঠানে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। বিআইজিডির আয়োজনে ‘অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ: মানুষ কী ভাবছে’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা সহযোগী শেখ আরমান তামিম অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন।

জরিপে জানতে চাওয়া হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কাজের প্রচেষ্টা কেমন, তাতে ১০০ নম্বরের মধ্যে কত দেবেন—এমন প্রশ্নে ৪০ শতাংশ মানুষ সরকারকে ৮১ থেকে ১০০ নম্বর দিয়েছেন। ৬১ থেকে ৮০ নম্বর দিয়েছেন ২১ শতাংশ, ৪১ থেকে ৬০ নম্বর দিয়েছেন ১৯ শতাংশ আর ২১ থেকে ৪০ নম্বর দিয়েছেন ৭ শতাংশ মানুষ। সরকারকে শূন্য থেকে ২০ নম্বর দিয়েছেন ১৩ শতাংশ মানুষ।

অবশ্য গত আগস্টে সরকারকে ৮১ থেকে ১০০ নম্বর দিয়েছিলেন ৪৮ শতাংশ মানুষ। সেই হিসাব দেখলে বোঝা যায়, সরকারের প্রচেষ্টায় সবচেয়ে আস্থাশীল মানুষের সংখ্যা আগের তুলনায় ৮ শতাংশ কমেছে।

জরিপে গ্রাম ও শহরের নানা শ্রেণি–পেশার ৪ হাজার ১৫৮ মানুষের মতামত নেওয়া হয়৷ তাঁদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ, ৪৭ শতাংশ নারী; ৫১ শতাংশ গ্রামের ও ৪৯ শতাংশ শহুরে। জরিপে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ, চলমান সমস্যা, সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করে মানুষের মতামত জানতে চাওয়া হয়। গত ১৫ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে এই জরিপ চালানো হয়। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে বিআইজিডির পালস সার্ভের প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়েছিল।

জরিপে প্রশ্ন করা হয়, গত এক মাসের রাজনৈতিক অবস্থা চিন্তা করে আপনার কী মনে হয়, বাংলাদেশ ঠিক পথে নাকি ভুল পথে যাচ্ছে? উত্তরে ৫৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, দেশ ঠিক পথে যাচ্ছে। ৩৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, দেশ ভুল পথে যাচ্ছে। পুরুষদের ৫৭ শতাংশ আর নারীদের ৫৩ শতাংশ মনে করেন, দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে যাচ্ছে। তবে গত আগস্টে বিআইজিডির জরিপে ৭১ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন, দেশ ঠিক পথে যাচ্ছে। ভুল পথে যাচ্ছে বলেছিলেন ১২ শতাংশ।

একইভাবে গত এক মাসের অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় দেশ ঠিক পথে নাকি ভুল পথে যাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ৪৩ শতাংশ মানুষ বলেছেন, দেশ ঠিক পথে যাচ্ছে৷ ভুল পথে যাচ্ছে বলে মনে করেন ৫২ শতাংশ মানুষ৷ পুরুষদের ৪৩ শতাংশ আর নারীদের ৩৯ শতাংশ মনে করেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে ঠিক পথে যাচ্ছে। গত আগস্টে এ ক্ষেত্রে বিআইজিডির জরিপে ৬০ শতাংশ মানুষ বলেছিলেন, দেশ ঠিক পথে যাচ্ছে, ভুল পথে যাচ্ছে বলেছিলেন ২৭ শতাংশ।

রাজনীতি ও অর্থনীতি মিলিয়ে আশাবাদী ৩৭ শতাংশ মানুষ আর নিরাশাবাদী ২৯ শতাংশ। আগের জরিপে আশাবাদী ছিলেন ৬৮ শতাংশ আর নিরাশাবাদী ১৩ শতাংশ।

নির্বাচিত সরকার দেশ ভালো চালাবে

অন্তর্বর্তী সরকারের চেয়ে নির্বাচিত সরকার দেশ ভালো পরিচালনা করবে কি না, এমন প্রশ্নে ৭৯ শতাংশ উত্তরদাতা নির্বাচিত সরকারের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। দ্বিমত প্রকাশ করেছেন ১৫ শতাংশ।

অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে ২৪ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তিন বছর বা তার বেশি (এঁদের ১৮ শতাংশ অন্তত স্নাতক করেছেন আর ২০ শতাংশের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই)। ১৬ শতাংশ বলেছেন দুই বছর (এঁদের ৩২ শতাংশ অন্তত স্নাতক করেছেন আর ১৭ শতাংশের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই)। ১৪ শতাংশ বলেছেন এক বছর (এঁদের ১৪ শতাংশ অন্তত স্নাতক করেছেন আর ১২ শতাংশের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই), ১৯ শতাংশ মানুষ বলেছেন তিন থেকে ছয় মাস (এঁদের ১৯ শতাংশ অন্তত স্নাতক করেছেন আর ১৭ শতাংশের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই)। অন্তর্বর্তী সরকারের অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছেন ৫ শতাংশ মানুষ (এঁদের ৩ শতাংশ অন্তত স্নাতক করেছেন আর ৬ শতাংশের কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই)।

প্রধান সমস্যা অর্থনৈতিক

আপনার মতে এই মুহূর্তে দেশের প্রধান সমস্যা কী—জরিপে এই প্রশ্নে ৬৭ শতাংশ মানুষ অর্থনৈতিক সমস্যার (দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক বা ব্যবসায়িক মন্দা) কথা বলেছেন৷ ৯ শতাংশ রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতার কথা বলেছেন। আইনশৃঙ্খলার অবনতির কথা বলেছেন ৪ শতাংশ মানুষ। ৩ শতাংশ গণতন্ত্রের অভাব আর ২ শতাংশ নিরাপত্তার অভাবের কথা বলেছেন। সমস্যা নেই বলেছেন ৫ শতাংশ মানুষ।

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে পরিণত হওয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ৭৫ শতাংশ মানুষ, সমর্থন জানাননি ২১ শতাংশ৷ গত আগস্টের জরিপে এই প্রশ্নে ৮৩ শতাংশ মানুষ হ্যাঁ-সূচক আর ১০ শতাংশ মানুষ না-সূচক উত্তর দিয়েছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালোভাবেই সামাল দিচ্ছে বলে জরিপে মত দিয়েছেন ৪১ শতাংশ মানুষ। এ ক্ষেত্রে নেতিবাচক উত্তর দিয়েছেন ২৮ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে কিছুই পরিবর্তন হয়নি বলে মনে করেন ২৫ শতাংশ মানুষ।

অন্তর্বর্তী সরকার কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তা আবার পরিবর্তন করার বিষয়ে জরিপে ৪৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, সরকার জনগণের মতামতের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছে। ২১ শতাংশ মানুষের মতে, সরকার ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় এমনটা হচ্ছে আর ২৪ শতাংশের মত হলো, সরকার নিজের সিদ্ধান্তে স্থির থাকতে পারছে না।

অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা, অনিয়ম-দুর্নীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে শক্ত হাতে দেশ পরিচালনা করছে কি না, এই প্রশ্নে ৫৬ শতাংশ মানুষ হ্যা-সূচক উত্তর দিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে না-সূচক উত্তর দিয়েছেন ৩৯ শতাংশ।

জুলাই মাসের আগের তুলনায় বর্তমানে নারীদের নিরাপত্তা কেমন হয়েছে—এই প্রশ্নের উত্তরে ৩৯ শতাংশ নারী বলেছেন, জুলাইয়ের আগের চেয়ে নারীদের নিরাপত্তার অবস্থা এখন ভালো। পুরুষদের ৪৯ শতাংশও তা-ই মনে করেন। অন্যদিকে ৩০ শতাংশ নারী মনে করেন, নারীদের নিরাপত্তার অবস্থা এখন আগের চেয়ে খারাপ। পুরুষদের ২৫ শতাংশও এমনটা মনে করেন। নারীদের নিরাপত্তা আগের মতোই আছে বলে মনে করেন ২৮ শতাংশ নারী, পুরুষদের ২৩ শতাংশেরও তা-ই মত।

জুলাই মাসের আগে ভিন্নমতের (ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক, ব্যক্তিগত ইত্যাদি ক্ষেত্রে) মানুষের প্রতি সহনশীলতার যে অবস্থা ছিল, সেই তুলনায় এখন ভিন্নমতের মানুষের প্রতি সহনশীলতা কেমন বলে মনে করেন—এই প্রশ্নের জবাবে ৪৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, সহনশীলতা বেড়েছে। সহনশীলতা কমেছে বলেছেন ৩১ শতাংশ। সহনশীলতা আগের মতোই আছে বলেছেন ২০ শতাংশ উত্তরদাতা।

জরিপের ফল প্রকাশের পর অনুষ্ঠানে প্যানেল ও উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক আহমেদ আহসান, বিআইজিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো মির্জা এম হাসান, নির্বাহী পরিচালক ইমরান মতিন প্রমুখ।

সুত্র: প্রথম আলো

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles