ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১১২ দিন পর আগামীকাল রোববার ক্লাস শুরু হতে যাচ্ছে। ক্লাস শুরুর আগে আজ শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের ১০টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত এই সভার প্রথম পর্বে উপস্থিত ছিল জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরও।
মতবিনিময়ে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ ছাত্রসংগঠনের নেতারা ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ছাত্র সংসদকে কার্যকর করার দাবি জানান। সভার দুই পর্বে বিশ্ববিদ্যালয় শাখার শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও প্রস্তাব তুলে ধরেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতিসহ সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার আলোচনা সামনে আসার পর আজ ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খানের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় দুই সহ–উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টর ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
প্রথম পর্বে আলোচনায় অংশ নেন ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল এবং বিপ্লবী ছাত্র–যুব আন্দোলন। দ্বিতীয় পর্বে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট (বাসদ), ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান সাংবাদিকদের জানান, “আমাদের মূল অগ্রাধিকার হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করা।”
ছাত্রদলের নেতা গণেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন সিন্ডিকেটকে ‘খুনি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রতিনিধিত্বকারী দালালদের সিন্ডিকেট’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তা ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান। গণেশ বলেন, শিক্ষার্থীদের ভাবাবেগের ওপর ভিত্তি করে রাজনীতি পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, সেটাকে কাটিয়ে উঠতে সময় লাগবে।
নাহিদুজ্জামান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্র রাজনীতিবিমুখ নয় এবং ফ্যাসিবাদ-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ছাত্ররাজনীতির আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, প্রশাসন জানিয়েছে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ছাত্রশিবির সভায় ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। শিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম বলেন, “আমরা একটি সংলাপের আহ্বান জানিয়েছি, যেখানে সকল ছাত্রসংগঠন অংশগ্রহণ করবে।” তিনি দাবি করেন যে ছাত্রলীগ ও ১৪ দলভুক্ত সংগঠনের রাজনীতি করার অধিকার নেই।
সভায় ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাঈন আহমেদ ছাত্ররাজনীতির নামে অপকর্ম ঠেকানোর জন্য নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান। ছাত্র ফ্রন্টের নেতা সোহাইল আহমেদ প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারির জন্য সেল গঠনের প্রস্তাব করেন।
ছাত্র ফেডারেশনের আহ্বায়ক আরমানুল হক বলেন, আমরা রাজনীতি নিষিদ্ধের পক্ষে নই, যৌক্তিক সংস্কার চেয়েছি।