শাক-সবজিতে হেভি মেটাল, লালশাক, শিম, শসা, ঢ্যাঁড়শ ও পটোলের মতো জনপ্রিয় শাক-সবজিতে ক্ষতিকর ভারি ধাতুর উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। শুধু শাক-সবজি নয়, আম, লিচুসহ বিভিন্ন ফলেও কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর ধীরে ধীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ভারি ধাতু ও রাসায়নিক উপাদান মানুষের খাদ্যচক্রে সরাসরি কোনো সমস্যা না করলেও দীর্ঘমেয়াদে তা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তবে এতে নির্দিষ্ট কোনো খাদ্য নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে উৎপাদনের উৎসে বিষ ছড়ানোর সুযোগ বন্ধ করতে হবে। হেভি মেটাল নিয়ন্ত্রণে সার ও কীটনাশকের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমদানি করা কীটনাশকে ভারি ধাতুর উপস্থিতি বন্ধ করতে হবে।
সোমবার রাজধানীতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আয়োজিত একটি সেমিনারে সবজি ও ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি নিয়ে করা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য ড. মোহাম্মদ সোয়েবের স্বাগত বক্তব্যের পর, সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএফএসএ’র সদস্য ড. মোহাম্মদ মোস্তফা। আলোচক হিসেবে ছিলেন শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরিচালক ড. শামশাদ বেগম কোরাইসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল রউফ মামুন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম ও ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া সম্প্রতি বাজার থেকে সংগ্রহ করা ৯ ধরনের সবজিতে রাসায়নিকের মাত্রা নিয়ে একটি গবেষণা করেন। সেই সবজিগুলোর মধ্যে ছিল আলু, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, টমেটো, লালশাক, পটোল, বাঁধাকপি, শসা ও মটরশুঁটি। গবেষণায় দেখা গেছে, এসব সবজিতে লেড, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়ামসহ বেশ কয়েকটি ক্ষতিকর ভারি ধাতু উচ্চমাত্রায় পাওয়া গেছে, বিশেষ করে লালশাকে।
লালশাকে ক্যাডমিয়ামের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ে, যেখানে সহনীয় মাত্রা ১৯০ মাইক্রোগ্রাম প্রতি কেজি, সেখানে লালশাকে পাওয়া গেছে ৭০৪.৩২ মাইক্রোগ্রাম প্রতি কেজি। অন্যান্য সবজির মধ্যে বেগুন, ঢ্যাঁড়শ ও টমেটোতেও মাত্রাতিরিক্ত ক্যাডমিয়াম পাওয়া গেছে। ক্রোমিয়াম ধাতু শিম, শসা, ঢ্যাঁড়শ, পটোল এবং লালশাকে বেশি পাওয়া গেছে।
এ ছাড়া, আম, লিচু, বরই এবং পেয়ারার ৩২০টি নমুনায় কীটনাশকের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ ফলের মধ্যে ক্ষতিকর মাত্রার কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ রয়েছে।
সুত্র: নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের গবেষণা